গুলিবিদ্ধ কিশোরকে নিজের রিকশায় তুলতে গিয়ে দেখেন, এ তো তাঁরই ছেলে!

quota reform movement

রাজধানীর শনির আখড়ায় আজ সকালে সংঘটিত সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এক কিশোরকে নিজের রিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে জানতে পেরেছেন, সে আর কেউ নয়, তাঁরই সোনাগো।

ওবায়দুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক আজ সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন। কাজলা এলাকার অনাবিল হাসপাতালের সামনে যাওয়ার পথে তিনি খবর পান, এক কিশোরকে গুলি লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

ওবায়দুল দ্রুত কিশোরটিকে রিকশায় তুলে হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যে তিনি যখন কিশোরের মুখের দিকে তাকান, তখন তিনি হতভম্ব হয়ে যান। গুলিবিদ্ধ কিশোরটি আর কেউ নয়, তাঁর নিজের ছেলে আমিনুল ইসলাম।

আমিন ফুটবল খেলতে খুব ভালোবাসত। সে ফুটবলার হতে চাইত। কিন্তু আজ সে আর নেই।

ওবায়দুলের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, আমিনের বয়স ছিল মাত্র ১৬। সে ছোটবেলায় মাদ্রাসায় পড়ত। পরে পড়া ছেড়ে কাজে যোগ দিয়েছিল। স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করত। আমিনের মা সেলিনা বেগম বারবার বলছিলেন, ‘কী অপরাধ ছিল আমার ছেলের? ছেলেরে মারল ক্যান? আল্লাহ তুমি এর বিচার করো।’ ছেলের মৃত্যুর কোনো বিচার চান কি না, জানতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মারা যাওয়া সন্তানের অন্য বাবা-মায়েদের মতো আমিনের মা–বাবাও বললেন, তাঁরা তো জানেনই না, তাঁদের ছেলেকে কে মেরেছে। আমিনের বুকের বাঁ পাশে গুলি লেগে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। ওবায়দুল ইসলাম শুধু দেখেছেন, ছেলের বুক ও পিঠে স্কচটেপ লাগানো।

আমিনের মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবাই আমিনের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।