ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা: ৪৩ দেশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধের পরিকল্পনা

Trump administrations new travel ban

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আবারও কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের তুলনায় আরও বিস্তৃত হবে।

তিন স্তরের নিষেধাজ্ঞা

নতুন খসড়া তালিকা অনুযায়ী, দেশগুলোকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে— লাল, কমলা ও হলুদ তালিকা

লাল তালিকা: সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ দেশগুলোর তালিকা। এই দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ করা হবে। এই তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন

🟧 কমলা তালিকা: এই তালিকার দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় কঠোরতা থাকবে। সাধারণ অভিবাসী ও পর্যটকদের জন্য ভিসা নিষিদ্ধ থাকলেও, ধনী ব্যবসায়ীদের জন্য কিছুটা শিথিলতা থাকতে পারে। কমলা তালিকায় রয়েছে বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান

🟨 হলুদ তালিকা: এই দেশগুলোর নাগরিকদের ভিসার ক্ষেত্রে এখনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি, তবে তাদের সরকারকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা ত্রুটি সংশোধন করতে বলা হয়েছে। সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে তাদেরও লাল বা কমলা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। এ তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশ, যার মধ্যে আছে কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, চাদ, লাইবেরিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট লুসিয়া, ভানুয়াতু ও জিম্বাবুয়ে।

খসড়া তালিকায় থাকা বেশিরভাগ দেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ, দরিদ্র অথবা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বিবেচিত। তবে কিছু দেশ, যেমন ভুটান কেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এছাড়া, রাশিয়ার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে শুধু কড়াকড়ি আরোপের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো ২০২১ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাতিল করেছিলেন। তবে ট্রাম্প এবার পুনরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর, গোয়েন্দা সংস্থা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তালিকাটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এ তালিকা হোয়াইট হাউসে পাঠানো হবে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও অভিবাসন নীতিতে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে এখনই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।