বিদেশ সফরে স্বামী-স্ত্রী বা সন্তানকে সঙ্গে নেওয়া যাবে না: সরকারি নির্দেশনা

Bidesh Visit Family nite parben na Govt officer

সরকারি কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় কাজে বিদেশ সফরে গেলে আর স্বামী-স্ত্রী বা সন্তানদের সঙ্গে নিতে পারবেন না। এমন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তিনটি কড়া নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

গত ৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক পরিপত্রে বলা হয়, সরকারি কাজে কোনো কর্মকর্তা বিদেশ সফরে গেলে তাঁর পরিবার—স্বামী, স্ত্রী কিংবা সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই নির্দেশনার আলোকে একই দিন তিনটি নির্দেশনা জারি করে।

এ ছাড়া ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ সফর করাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পরিপত্রে বলা হয়েছে, জরুরি কারণ ছাড়া উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও সচিবদের একান্ত সচিব (পিএস) ও সহকারী একান্ত সচিবদের (এপিএস) সফরসঙ্গী হিসেবে নেওয়া যাবে না।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া স্বাক্ষরিত এই পরিপত্রটি পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানিয়া আফরোজ সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, পরিদপ্তর ও অধিদপ্তরে পাঠান। পরিপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর একটি পরিপত্রে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছিল। সেই পরিপত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের জন্য বছরে সম্ভাব্য সফরের তালিকা জমা দেওয়া, ডেটাবেজ তৈরি এবং একসঙ্গে ভ্রমণ এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

সাম্প্রতিক নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ সফরে সাধারণভাবে যাবেন না। তবে জাতীয় স্বার্থে সফর অপরিহার্য হলে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

বিদেশে অনুষ্ঠিত সেমিনার বা কর্মশালায় অংশ নেওয়ার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কোন স্তরের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, অন্য দেশ থেকে কারা অংশ নিচ্ছেন—এসব তথ্য আমন্ত্রণপত্রে থাকতে হবে। প্রস্তাবিত কর্মকর্তার কার্যক্রমের সঙ্গে ভ্রমণের সম্পর্ক, প্রয়োজনীয়তা এবং উপযোগিতাও ব্যাখ্যা করতে হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, কেনাকাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইনস্পেকশন, ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট্যান্স টেস্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে কেবল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদেরই পাঠানোর বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় কিংবা বিনোদনমূলক ভ্রমণ এড়িয়ে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা ছুটিতেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ভ্রমণের প্রস্তাবের সঙ্গে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার গত এক বছরের বিদেশ সফরের তথ্যও সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে।

সরকারের মতে, এসব নির্দেশনার উদ্দেশ্য হলো—অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে রাষ্ট্রীয় সফরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।