গত আট মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ব্যবহার করে দেশের বৈদেশিক দেনার একটি বড় অংশ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। কাতারের দোহায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “এই বিপদের দিনে আপনারা পাশে না দাঁড়ালে বাংলাদেশ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারতো না।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, “কাতার থেকে আমদানিকৃত এলএনজি বাবদ কাতারের কাছে আমাদের ২৫৪ মিলিয়ন ডলারের দেনা ছিল। প্রধান উপদেষ্টা স্যারের সফরের আগে সেই দেনা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়েছে, যাতে সম্মানের সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “এখন কাতারের আমাদের কাছে এক টাকাও পাওনা নেই। গতকাল (২৩ এপ্রিল) আমরা সব পরিশোধ করেছি এবং কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা এত দ্রুততা আশা করেননি। এটা সম্ভব হয়েছে আপনাদের—প্রবাসীদের—অর্থায়নে।”
জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট ৩.২ বিলিয়ন ডলারের বকেয়া ছিল, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ মিলিয়নে। তিনি বলেন, “এই অর্থনৈতিক উত্তরণ সম্ভব হয়েছে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোর কারণে। এর ফলে দেশের রিজার্ভ বেড়েছে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনায় আমাদের অবস্থানও শক্ত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে কাতারে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। তাদের প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা ও দেশের প্রতি ভালোবাসায় অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
এই মতবিনিময় সভা প্রবাসীদের সঙ্গে সরকারের দৃঢ় সম্পর্ক ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।