বিদ্যুৎ খাতে ট্যারিফ জটিলতা, বকেয়া নিষ্পত্তি ও সমন্বিত লোডশেডিং পরিকল্পনায় সরকার

power sector tariff review Bangladesh

বিদ্যুৎ খাতের বিদ্যমান সংকট ও ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সরকারের চুক্তিগুলোতে এমনভাবে ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ভোক্তাদের শোষণের সমতুল্য।

তিনি জানান, “বিদ্যুৎ খাতের মূল সমস্যা হলো—বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে এমন চুক্তি করা হয়েছে যেখানে অযৌক্তিকভাবে ট্যারিফ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোক্তাকে বাড়তি দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে।” এই পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি কমিটি কাজ করছে এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন খরচ নির্ধারণে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিট খরচকে বেঞ্চমার্ক হিসেবে ধরা হয়েছে।

এদিকে, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ খাতে পূর্বের বকেয়া বিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে, ফলে এখন কয়লা, এলএনজি এবং জ্বালানি তেলের মতো প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। তবে খরচও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

“জ্বালানি তেল ব্যবহারের বিষয়টিও হিসাব করে দেখতে হবে”, বলেন উপদেষ্টা। তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে দিনে ১৬ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে, যদিও কিছু সীমিত লোডশেডিং (১৭৯ মেগাওয়াট) করতে হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, এবার গ্রাম ও শহরের মধ্যে লোডশেডিংয়ে কোনো পার্থক্য থাকবে না। অতীতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গ্রামের দিক থেকেই লোডশেডিং শুরু করত, এবার এমন বৈষম্য করা হবে না। বিদ্যুৎ ঘাটতি হলে তা সমভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদি বিদ্যুৎ চুক্তিগুলোতে “capacity payment” এর মতো একপাক্ষিক সুবিধা যুক্ত থাকার ফলে সরকারকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিতে হচ্ছে এমনকি যখন বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে না। এর ফলে ভোক্তাদের জন্য বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাচ্ছে, এবং বাজেটেও চাপ পড়ছে।

সরকার সূত্র জানায়, ট্যারিফ কাঠামো পুনর্বিবেচনা করে ন্যায্য ও বাস্তবভিত্তিক মূল্য নির্ধারণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।