গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা পেনাল্টি শুটআউটে শুরুটা দারুণ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ভারতের দ্বিতীয় শুটার রোহেন সিংয়ের শট ঠেকিয়ে দিয়ে স্বপ্নের দ্বারে পৌঁছেছিল বাংলাদেশ। গ্যালারিতে তখন উল্লাস। কিন্তু ভাগ্য শেষ হাসি হেসেছে ভারতীয়দের পক্ষেই। শেষ দিকে সালাহ উদ্দিন ও অধিনায়ক নাজমুল হুদার মিস—সবকিছু ম্লান করে দেয়। সিংগাময়ুম শামির জয়সূচক শটে চতুর্থবারের মতো সাফের বয়সভিত্তিক শিরোপা জিতে নেয় ভারত।
প্রথম মিনিটেই ডি-বক্সের বাইরে থেকে লম্বা ফ্রি-কিকে জাল কাঁপিয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন সিংগাময়ুম শামি। চমকে ওঠে বাংলাদেশের রক্ষণ। এরপরও রক্ষণ সামলিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। ২৫ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে সুমন সরেন দারুণ একটা আক্রমণ সাজালেও, ফাইনাল থার্ডে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে নষ্ট হয়ে যায় সেই সুযোগ।
৪২ মিনিটে আসে বিতর্ক। মোরশেদ আলীর ক্রসে হেড করেন মিঠু, পোস্টে লেগে ফিরে আসা বলে হেড করে জালে পাঠান রিফাত কাজী। কিন্তু শ্রীলঙ্কান রেফারি জাফরান তা বাতিল করেন, বললেন ফাউল! অথচ রিপ্লেতে তেমন কিছু বোঝা যায়নি। ধারাভাষ্যকারও জানালেন, বাঁশি বাজানোর আগে গোল হয়েছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়ে উঠে বাংলাদেশ। চাপ বাড়াতে থাকে একের পর এক আক্রমণে। অবশেষে ৬০ মিনিটে গোল। বদলি হিসেবে নামা জয় আহমেদের দুর্দান্ত শটে সমতায় ফেরে লাল-সবুজ। ভারতের জন্যও এটাই ছিল এবারের আসরে প্রথম হজম করা গোল।
বাকি সময়টুকুতে আর কেউ গোল করতে না পারায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই হলো নাটকের শেষ অঙ্ক। বাংলাদেশ পেনাল্টি শুরু করেছিল দারুণভাবে, ইসমাইলের সেভে এগিয়ে ছিল দল। কিন্তু সালাহ উদ্দিন আর নাজমুল হুদা গোল করতে ব্যর্থ হন। ভারতের শামি শেষ শটে কোনো ভুল না করে শিরোপা নিয়ে ছুটলেন উল্লাসে।
বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে শুরু করেছিল মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র দিয়ে। এরপর ভুটানকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় তারা। নেপালকে হারিয়ে জায়গা করে নেয় ফাইনালে। ফাইনালেও খেলেছে মাথা উঁচু করেই, শুধু শেষ হাসিটা হাসতে পারেনি।
বয়সভিত্তিক সাফে এর আগে একবারই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ, সেটি ছিল গত বছর অনূর্ধ্ব-২০ আসরে নেপালকে হারিয়ে। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে ফরম্যাট ও বয়সভিত্তিক বিভাগ বারবার বদলালেও ভারতের আধিপত্য থেকেই যাচ্ছে।