ফ্রান্সের ভিজিট ভিসা কিভাবে আবেদন করবেন

My family is good and I am a student

ফ্রান্স, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার দেশ, পশ্চিম ইউরোপের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। রোমান সভ্যতার প্রভাব ধারণ করে, ফ্রান্স শিল্প, সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছে। বিপ্লব, নেপোলিয়ন এবং উনিশ শতকের ঔপনিবেশিকতার ঝড়ো ইতিহাসের পর, আজকের ফ্রান্স আধুনিকতার সাথে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন। এইফেল টাওয়ার, লুভ্রে জাদুঘর, ভার্সাই প্রাসাদ, ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা, ডিজনি ল্যান্ডের মতো আকর্ষণীয় স্থান পর্যটকদের মনে ছুঁয়ে যায়।

ফ্রান্সে অনেক বাংলাদেশীদের প্রবাসীদের বসবাস তাই ফ্রান্স ভ্রমণের জন্য দুর্দান্ত একটি পরিকল্পনা হতে পারে। তাই ফ্রান্সে Visit করার জন্য কিভাবে ভিসার জন্য আবেদন আবেদন করা যায় সে সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্স ভিসার জন্য আবেদন করা একটি সহজ প্রক্রিয়া, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়েছে যা আপনাকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। ফ্রান্সের ভিজিট ভিসা (শেঞ্জেন ভিসা) ৯০ দিনের কম সময়ের জন্য ভ্রমণকারীদের জন্য হয়। নিচে বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:

ধাপ ১: ভিসার ধরন নির্ধারণ

আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং সময়কাল অনুযায়ী, আপনি কোন ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করবেন তা নির্ধারণ করুন। সাধারণত, ফ্রান্সের জন্য Schengen  ভিজিট ভিসা, পর্যটন, ব্যবসা, বা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য হয়ে থাকে।

ধাপ ২: আবেদন ফর্ম পূরণ

ফ্রান্সের সেনজেন  ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এটি অনলাইনে পাওয়া যেতে পারে [France-Visas ওয়েবসাইট- https://france-visas.gouv.fr/en/home।.

ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ

নিম্নলিখিত ডকুমেন্টসগুলি সাধারণত ফ্রান্সের ভিজিট ভিসার জন্য প্রয়োজন হয়:

1. পাসপোর্ট: আপনার পাসপোর্টটি ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থেকে কমপক্ষে তিন মাস পর পর্যন্ত বৈধ হতে হবে এবং এতে অন্তত দুটি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।

2. আবেদন ফর্ম: সম্পূর্ণ পূরণ করা এবং স্বাক্ষর করা শেঞ্জেন ভিসা আবেদন ফর্ম।

3. ফটো: সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (বায়োমেট্রিক ফটো)।

4. ফ্লাইট বুকিং: ফ্রান্সে আসা-যাওয়ার নিশ্চিত ফ্লাইট টিকেট।

5. হোটেল রিজার্ভেশন: ফ্রান্সে থাকার সময়কালীন হোটেল বুকিং বা থাকার ব্যবস্থা।

6. বীমা: ভ্রমণ স্বাস্থ্য বীমা, যা শেঞ্জেন অঞ্চলে আপনার পুরো থাকার সময়কালের জন্য অন্তত ৩০,০০০ ইউরো পর্যন্ত কভার করবে।

7. আর্থিক ক্ষমতার প্রমাণ: আপনার ভ্রমণ এবং ফ্রান্সে থাকার সময়কালের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের প্রমাণ। এটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট, চাকরির সার্টিফিকেট, বা স্পনসরশিপ লেটার হতে পারে।

8. কাভার লেটার: আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং বিস্তারিত বিবরণ সহ একটি চিঠি।

9. ভিসা ফি: শেনজেন ভিসা  ট্যুরিস্ট, ব্যবসা, পরিবার বা বন্ধু  80 ইউরো ফি দিতে হবে।

ধাপ ৪: ভিসা আবেদন জমা

ফ্রান্সের ভিসা আবেদন গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ভিসা আবেদন কেন্দ্র (VFS Global) বা ফ্রান্সের দূতাবাসে ভিসা আবেদন জমা দিতে হবে। বাংলাদেশে VFS Global তিনটি শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট ভিসা আবেদন সেবা প্রদান করে। মনে রাখবেন  VFS Global একটি সেবা প্রদানকারী অনুমোদিত ভিসা আবেদন গ্রহণকারী সংস্থা এবং ফ্রান্স সরকারের অংশ নয়।

রিলেটেড আর্টিকেলঃ ফ্রান্সের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

ধাপ ৫: বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান

ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার সময়, আপনাকে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য (ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি) প্রদান করতে হবে।

ধাপ ৬: সাক্ষাৎকার

কিছু ক্ষেত্রে, ভিসা অফিসার সাক্ষাৎকারের জন্য আপনাকে ডাকতে পারেন। এই সময় আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে।

ধাপ ৭: ভিসা প্রসেসিং সময়

ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার পর সাধারণত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল জানা যায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি সময় নিতে পারে।

ধাপ ৮: পাসপোর্ট সংগ্রহ

ভিসা অনুমোদিত হলে, আপনাকে ভিসা স্ট্যাম্প করা পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। আপনি VFS Global বা দূতাবাস থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারেন।

এটি ফ্রান্সের ভিজিট ভিসার জন্য বাংলাদেশ থেকে আবেদন করার সাধারণ ধাপ। সঠিক এবং আপডেটেড তথ্যের জন্য ফ্রান্সের দূতাবাস বা VFS Global এর ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা উচিত।