আজ শনিবার (৭ জুন) সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের দিন ভোর থেকেই দেশজুড়ে ঈদের জামাত ও পশু কোরবানির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মুসলমানদের জীবনে বছরে দুটি খুশির দিনের একটি এই ঈদুল আজহা, যা ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। সামর্থ্যবানরা আজ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করছেন। এই কোরবানি শুধু পশু জবাই নয়, বরং অন্তরের পশুত্বকে বিসর্জন দিয়ে আত্মশুদ্ধির এক অনন্য উপলক্ষ। আল্লাহ বলেন, “তোমাদের জবাই করা পশুর রক্ত-মাংস আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, পৌঁছায় শুধু তোমাদের তাকওয়া।”
এই তাকওয়া—আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহভীতি—এই দিনটির মূল শিক্ষা। এদিন মানুষকে শেখায় অন্যায়, জুলুম, মিথ্যা ও পাপাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এবং মানবিকতায় উজ্জীবিত হতে।
ঈদের সকালে সবাই সাধ্যমতো নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরে ঈদুল আজহার নামাজে অংশ নেন। নামাজ শেষে শুরু হয় কোরবানির কাজ। কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগে ভাগ করে এক ভাগ গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া হয় এবং এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য রাখা হয়। এর মাধ্যমে গরিব-ধনী সবাই মিলে ঈদের আনন্দে শরিক হন।
সারা বছর যারা মাংস কিনে খেতে পারেন না, তাদের ঘরেও আজ রান্না হয় মাংস। মহান আল্লাহ নিজেই তাদের হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঈদের এই ত্যাগ ও সহমর্মিতার বার্তাই সমাজে সাম্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে শক্তিশালী করে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উদ্দীপনা ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। মধ্যপ্রাচ্যে উট, দুম্বা, ও ভেড়া কোরবানি দেওয়া হলেও বাংলাদেশে গরু ও ছাগলের কোরবানি বেশি প্রচলিত।
এই মহতী দিনটি যেন আমাদের জীবনে প্রকৃত ত্যাগ, মানবিকতা ও নৈতিকতা চর্চার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে—এটাই সবার কামনা। ঈদ মোবারক!