সিলেটে শিক্ষার্থীদের গণমিছিলে পুলিশের গুলি-কাঁদানে গ্যাস, বহু আহত

Anti-discrimination student movement in Sylhet

সিলেটে ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিল কর্মসূচিতে পুলিশ সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, আন্দোলনকারীসহ অন্তত ১৫০ জনের মত আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকাল ৪টা থেকে সিলেটের সুরমা এলাকা থেকে মদিনা মার্কেট পর্যন্ত আশেপাশের এলাকা জুড়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলতে থাকে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সারা দেশের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ শীর্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল আজ। এরই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাঁধার সম্মুখীন হলে তারা মিছিল নিয়ে মদিনা মার্কেটের দিকে যাত্রা করে। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে মিছিলের পিছনের খানিক দূরত্ব বজায় রেখে সাজোয়া যান নিয়ে এগোতে থাকে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা আখালিয়া মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে আসলে পুলিশ মিছিলে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আখালিয়া ও মদিনা মার্কেট এলাকার আশেপাশের গলিতে অবস্থান নেয়। এসময় দফা দফা আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ পাল্টা প্রতিক্রিয়া সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুঁড়ে। এ সংঘর্ষে শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছে বলে জানায় শাবিপ্রবির সহসমন্বয়ক ফয়সাল হোসেন।

এদিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন তেমুখী বাসস্ট্যান্ডে আন্দোলনকারীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের পাশাপাশি তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি মিঠু দাস জয়ও গুলিবিদ্ধ হন। আখালিয়ার সংঘর্ষে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিকালে পাঁচটার দিকে আখালিয়া বিজিবি স্কুলের মাঝ রাস্তায় পুলিশের দু’মুখো হামলায় শফিক নামে এক কিশোর(১৫) গুলিবিদ্ধ হয়। তৎক্ষণাৎ তাকে নগরীর মাউন্ড এডোরা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের চলে যেতে বলে। তবে তাঁরা সেখান থেকে না সরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় ৬ জন পুলিশ আহত হয়েছে এবং আটজনকে পুলিশ আটক করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।