মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার কানাডার পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। বিষয়টি শুক্রবার (১১ জুলাই) প্রকাশিত বিবিসির একটি প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি খোলা চিঠিতে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। চিঠিটি তিনি ব্যক্তিগতভাবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে উদ্দেশ করে লেখেন।
ট্রাম্প জানান, “আপনারা যদি যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য উৎপাদন করেন, তাহলে কোনো শুল্ক দিতে হবে না।” এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়া এবং বিদেশি আমদানি নিরুৎসাহিত করার পুরনো অবস্থানই আবারও তুলে ধরলেন তিনি।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র কানাডার কিছু পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বব্যাপী স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম এবং যানবাহন শিল্পে আরোপিত শুল্ক ইতিমধ্যেই কানাডার শিল্পখাতে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (USMCA)–এর আওতায় ছাড়প্রাপ্ত পণ্যগুলোর ওপরও কার্যকর হতে পারে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে শুল্ক বাস্তবায়ন হলে এটি কানাডার অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য সম্পর্কের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
বিবিসি আরও জানায়, কানাডার চিঠিটি মূলত ২০টির বেশি এমন চিঠির একটি, যেগুলো ট্রাম্প সম্প্রতি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের উদ্দেশেও প্রকাশ করেছেন। সবগুলো চিঠিতেই ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকরের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল প্রবেশ ঠেকাতে কানাডার ব্যর্থতা, দুধশিল্পে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরোপিত শুল্ক এবং দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টিকে নতুন শুল্ক আরোপের যৌক্তিকতা হিসেবে উপস্থাপন করেন।
বর্তমানে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রায় ৭৫ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করে থাকে। বিশেষ করে গাড়ি শিল্প ও ধাতু সরবরাহে কানাডা একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এ অবস্থায় ৩৫ শতাংশ নতুন শুল্ক কানাডার অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।