লর্ডস টেস্টে শেষ বিকেলের সূর্য যখন বিদায়ের ছায়া ফেলছে, তখনো উত্তেজনার পারদ চড়ছিল আকাশে। শেষ উইকেটে ভারতের প্রয়োজন ৩০ রান, অপরাজিত রবীন্দ্র জাদেজা তখন ৫৬ রানে। আর তার সঙ্গী শেষ ব্যাটার মোহাম্মদ সিরাজ মাত্র ২ রান করে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বপ্নভঙ্গ—২২ রানে নাটকীয় জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
শেষ ব্যাটসম্যান সিরাজ নামার সময় ভারতের জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৯৩ রান, তখনো ৪৬ রান দূরে। ৯ উইকেট হারিয়ে চা-বিরতি পেছানো হয়। লর্ডসের গ্যালারিতে তখন উত্তেজনার ছড়াছড়ি। এমন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারও বলে ফেললেন, “এই ম্যাচ ভারতই জিতবে, আর লর্ডসের ব্যালকনিতে আবারও জার্সি খুলে উল্লাস হবে সৌরভ গাঙ্গুলীর মতো।”
তবে শেষরক্ষা হয়নি। যদিও লড়াইটা জমিয়ে তুলেছিলেন জাদেজা ও সিরাজ। এর আগে ১০ নম্বরে নামা যশপ্রীত বুমরা খেলেছেন ৫৪ বল, করেছেন ৫ রান। জাদেজার সঙ্গে ১৩২ বলে ৩৫ রানের নবম উইকেট জুটিটি ম্যাচে ফেরায় ভারতকে। এরপর সিরাজও ৩০ বল খেলে লড়াই করেন, ৮০ বলে তাদের ২৩ রানের শেষ উইকেট পার্টনারশিপে প্রাণ ফিরে পায় ম্যাচ।
তবে ইংলিশ পেসারদের দাপটে শেষ পর্যন্ত ভারত হারে ২২ রানে। বেন স্টোকস ছিলেন ম্যাচের নায়ক, ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। আর্চারও সমানতালে বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন (৩/৫৫)।
আগের দিন ৪ উইকেটে ৫৮ রান নিয়ে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করা ভারত দিনের প্রথম সেশনেই পড়ে যায় চাপে—লাঞ্চের আগেই ৮ উইকেট হারিয়ে ১১২ রান। স্টোকস যখন কে এল রাহুলকে ফিরিয়ে ৬ উইকেটে ৮১ রান করে দেন ভারতের স্কোর, তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচ দ্রুতই শেষ হবে ইংল্যান্ডের পক্ষে।
কিন্তু তখনও নাটক বাকি ছিল। জাদেজা একপ্রান্ত আগলে রেখে হার না মানা ৬১ রানের ইনিংস খেলে রীতিমতো ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন ভারতকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিরাজ আউট হয়ে গেলে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ভারতকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৩৮৭ ও ১৯২
ভারত: ৩৮৭ ও ১৭০ (৭৪.৫ ওভার)
জাদেজা ৬১*, রাহুল ৩৯
স্টোকস ৩/৪৮, আর্চার ৩/৫৫, কার্স ২/৩০
ফল: ইংল্যান্ড ২২ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন স্টোকস
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২–১–এ এগিয়ে