শেষ হলো ফুটবল বিশ্বের অন্যতম আলোচিত আসর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো ৩২ দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি।
নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে শুরু থেকেই দাপুটে ফুটবল খেলেছে চেলসি। পিএসজির রক্ষণভাগকে চাপে রেখে একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে পেছনে ঠেলে দেয় লন্ডনের ক্লাবটি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তিনটি গোল করে দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা নিশ্চিত করে চেলসি।
এই জয়ের ফলে শুধু ট্রফিই নয়, আর্থিক দিক থেকেও বড় পুরস্কার পেয়েছে ইংলিশ ক্লাবটি। টুর্নামেন্টজুড়ে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে চেলসি পেয়েছে মোট ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে অংশগ্রহণ বাবদ পেয়েছে ২ কোটি ৮৩ লাখ ডলার এবং পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে ৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। শুধু ফাইনাল জেতার জন্যই ক্লাবটির আয় হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ডলার।
টুর্নামেন্টের রানার্সআপ পিএসজিও পেয়েছে ১০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।
এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে মোট প্রাইজমানি ছিল ১ বিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ। ৩২টি দলের মধ্যে অংশগ্রহণের জন্য ৫২৫ মিলিয়ন ডলার এবং পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার ভাগ করে দেওয়া হয়।
নতুন ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে ইউরোপ থেকে ১২টি, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ৬টি, এশিয়া, আফ্রিকা ও কনকাকাফ থেকে ৪টি করে, ওশেনিয়া থেকে ১টি এবং স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১টি দল অংশ নেয়। আটটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে শুরু হয় গ্রুপ পর্ব, যেখানে প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল উঠে যায় নকআউট রাউন্ডে। টুর্নামেন্টজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় মোট ৬৩টি ম্যাচ।
মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ১৪ জুন পর্দা ওঠে ক্লাব বিশ্বকাপের। এক মাসব্যাপী জমজমাট এই আয়োজনের পর ১৩ জুলাই ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশ্ব ফুটবলের নতুন এই অধ্যায়। আয়োজনে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্ব ফুটবলের বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন ফরম্যাটে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন ফিফার একটি সাহসী সিদ্ধান্ত ছিল এবং তা পুরোপুরি সফল। বিশেষ করে আর্থিক দিক থেকে এই টুর্নামেন্ট ছাপিয়ে গেছে অতীতের যেকোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাকে।
এবারের আসরে ইউরোপীয় ক্লাবগুলো গড়ে ৩৯ মিলিয়ন পাউন্ড এবং দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাবগুলো গড়ে ২৪ মিলিয়ন পাউন্ড করে আয় করেছে। এমনকি নিউজিল্যান্ডের অপেশাদার ক্লাব অকল্যান্ড সিটিও পেয়েছে ৩.৩ মিলিয়ন পাউন্ড, যা তাদের গত বছরের পুরো আয়ের সাত গুণ।