পর্তুগিজ নতুন অভিবাসন আইন আটকে দিলেন রাষ্ট্রপতি

Portuguese President blocks new immigration law

পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সুজা অভিবাসন সংস্কার বিষয়ক নতুন আইন সাংবিধানিক আদালতে খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন করেছেন। সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত এই সংস্কারে অভিবাসীদের পারিবারিক পুনর্মিলনের উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপটি পর্তুগালের রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টেনেগ্রোর সরকারের প্রস্তাব এবং আন্দ্রে ভেন্টুরার নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী দল ‘চেগা’-এর সমর্থনে আনা হয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতোই এই সংস্কারের লক্ষ্য অভিবাসনের চাপে লাগাম দেওয়া এবং ‘পুল ফ্যাক্টর’ কমানো।

তবে প্রেসিডেন্ট রেবেলো দে সুজা এক দীর্ঘ বিবৃতিতে বলেছেন, এই আইনের কিছু ধারা সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোর—যেমন পরিবারিক ঐক্য এবং বৈষম্যহীনতার নীতি—বিরোধিতা করতে পারে। তিনি বলেন, বৈধভাবে দুই বছর বসবাসের শর্ত আরোপ করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলনের সুযোগ সীমিত করা পরিবার জীবনের অধিকারের ওপর একটি অসঙ্গতিপূর্ণ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

যদিও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আইনটি পাশ হয়েছে, প্রেসিডেন্ট সংবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনে এটি স্বাক্ষর করতে বাধ্য। তবে সাংবিধানিক আদালত যদি এটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, তবে সেই বাধ্যবাধকতা আর থাকে না। রেবেলো দে সুজার এই পদক্ষেপ ইউরোপে নতুন নয়—ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনির সরকারও আদালতের কারণে অভিবাসনসংক্রান্ত বেশ কিছু সংস্কার বিলম্বিত করেছে বা রোধ করেছে।

চেগা দল এই সংস্কারকে ‘প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে যা দেশের সামাজিক সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য এবং কার্যকর অন্তর্ভুক্তিকে নিশ্চিত করবে। দলনেতা আন্দ্রে ভেন্টুরা বলেছেন, পারিবারিক পুনর্মিলনে সীমাবদ্ধতা অভিবাসনের চাপে লাগাম দিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, বামপন্থী রাজনৈতিক দল এবং প্রেসিডেন্টের মতে, এই ধরনের সংস্কার বৈষম্য বাড়াতে পারে, অনিয়মিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করতে পারে এবং আইনের সামনে সবার সমান অধিকারের নীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

ইউরোপে আবারও দেখা যাচ্ছে এক প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্ব—একদিকে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পক্ষে শক্তি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিস্তৃত ব্যাখ্যার পক্ষে শক্তি।