যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান তৃতীয় দফার বাণিজ্য সংলাপে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির আভাস দিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (USTR) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানো হবে।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সাংবাদিকদের মাহবুবুর রহমান বলেন,
“আমাদের শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণে কমবে। তবে নির্দিষ্ট হার এখনো বলা যাচ্ছে না। আজ ও আগামীকাল আরও বৈঠক রয়েছে। আমরা আশাবাদী, বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক কিছু হবে।”
চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৬০টি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। পরে তা স্থগিত করলেও, ৮ জুলাই থেকে বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বাংলাদেশের পক্ষে শক্তিশালী প্রতিনিধি দল
ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৩০ থেকে বিকেল ৫:৩০ পর্যন্ত প্রথম দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী এবং ওয়াশিংটন দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, উভয় দেশের বাণিজ্য ঘাটতি মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ভিয়েতনামের ঘাটতি ১২৩ বিলিয়ন ডলার। এমন তুলনামূলক স্বল্প ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ শুল্ক ছাড়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রত্যাশা করছে।
বাংলাদেশ আরও জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বোয়িং থেকে ২৫টি বিমান কেনা
- ৫ বছরে প্রতিবছর ৭ লাখ টন গম আমদানি
- সয়াবিন, এলএনজি, তুলা, সামরিক সরঞ্জামসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যে গড়ে ১৫.৫% শুল্ক পড়ে, যা নতুন ঘোষণায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২-২৩%। পাল্টা শুল্ক কার্যকর হলে তা ৩৫%-এ পৌঁছাবে। তবে আলোচনার প্রেক্ষিতে এই হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
আলোচনার শেষ দিন ও সম্ভাব্য ফলাফল
তৃতীয় দফা আলোচনা বৃহস্পতিবার শেষ হবে। আলোচনায় সাফল্য এলে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সরকার।