ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: পর্তুগাল, স্পেন, ফ্রান্স ও গ্রিসে জরুরি সতর্কতা

europe wildfire portugal spain france greece

ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ভয়াবহ দাবানল অব্যাহত রয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে বহু প্রাণহানি ও হাজার হাজার হেক্টর জমি ভস্মীভূত হয়েছে।

পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সৌসা নিশ্চিত করেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় শহর গুয়ারদা’র সাবেক মেয়র কার্লোস দামাসো আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি ছুটি বাতিল করে রাজধানীতে ফিরে আসেন এবং ন্যাশনাল এমারজেন্সি অ্যান্ড সিভিল প্রোটেকশন অথরিটির বৈঠকে যোগ দেন।

দেশটিতে কয়েক হাজার অগ্নিনির্বাপক কর্মী দিনরাত আগুন নেভাতে কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই পর্তুগাল ইইউ সিভিল প্রোটেকশন মেকানিজম সক্রিয় করেছে এবং সোমবার পর্যন্ত চারটি অগ্নিনির্বাপক বিমান সহায়তা চেয়েছে।

স্পেনেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। দেশটিতে দাবানলে প্রাণ গেছে তিনজনের, যার মধ্যে দুজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক দমকলকর্মী। কাস্তিয়া ও লেয়ন অঞ্চলের হাইমে আপারিসিও ভিদালেস শুক্রবার নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা আএমইটি জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কান্তাব্রিয়ায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে। তারা সতর্ক করেছে যে শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দেশের বেশিরভাগ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি “খুব বেশি বা চরম পর্যায়ে” থাকবে। এ বছর এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৭ হাজার হেক্টর বনভূমি আগুনে পুড়ে গেছে, যদিও এটি ২০২২ সালের (৩ লাখ ৬ হাজার হেক্টর) তুলনায় কম।

এদিকে স্থানীয় মানুষরাও আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। কাস্তিয়া ও লেয়নের সেসনানদেজ দে তাবারা এলাকার কৃষক মারকো রাতোন বলেন, “আমরা আগুন আসতে দেখেই ব্যাগ, পানি ছিটানোর যন্ত্র, বাগানের পাইপ নিয়ে ছুটে যাই। চারপাশে তখন দগ্ধ মানুষ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল, গাড়ি, ট্রাক্টর, গুদাম ও ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ছিল।”

ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় অডে এলাকা লাল সতর্কতায় রয়েছে। ৫ আগস্ট শুরু হওয়া ভয়াবহ আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবারও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁতে পারে।

গ্রিসে তুলনামূলক স্বস্তি ফিরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসায় পরিস্থিতির উন্নতি হলেও রাজধানী এথেন্সসহ আটিকা ও পেলোপনিস এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি রয়ে গেছে।

এছাড়া আলবেনিয়ায় দাবানলে হাজার হাজার গবাদি পশু মারা গেছে এবং অন্তত ৪০টি ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে বলে সরকারি হিসাব জানিয়েছে।