পর্তুগালে জন্ম নেওয়া সন্তান থাকা সত্ত্বেও কিছু অভিবাসীকে দেশ ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছে পর্তুগিজ দৈনিক Público। বিষয়টি নিয়ে সংসদ পুনরায় অধিবেশন শুরু করার আগে আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টের সামনে বড় ধরনের অভিবাসী বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
অভিবাসন, সংহতি ও আশ্রয় সংস্থা AIMA (Agency for Integration, Migration and Asylum) অবশ্য বলেছে, সন্তানের জন্ম পর্তুগালে হয়ে থাকলে (অর্থাৎ সন্তান পর্তুগিজ নাগরিক হলে) সংশ্লিষ্ট অভিবাসীরা যেন তাদের ফাইলে তথ্য হালনাগাদ করেন। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, পর্তুগিজ সন্তান থাকা ব্যক্তিদের বহিষ্কারের কোনো নোটিশ তারা জারি করেনি—এটি আইনবিরুদ্ধ এবং তাদের জানা নেই এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে।
Público জানায়, ২০২০ সাল থেকে পর্তুগিজ আইনে বলা আছে—যদি কোনো বিদেশি দম্পতির সন্তান পর্তুগালে জন্মায় এবং বাবা-মা অন্তত এক বছর ধরে দেশটিতে বৈধভাবে বসবাস করেন, তবে সেই সন্তান জন্মগতভাবে পর্তুগিজ নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে। সরকার এখন এ আইন সংশোধনের চিন্তাভাবনা করছে, যেখানে বাবা-মায়ের আবাসন শর্ত এক বছর থেকে বাড়িয়ে তিন বছর করার প্রস্তাব আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, SEF বিলুপ্তির পর AIMA-র হাতে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার আবেদন জমে ছিল, যার মধ্যে জুন পর্যন্ত মাত্র ২৯ হাজারের নিষ্পত্তি হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার সবচেয়ে বেশি (৪৬%), এরপর রয়েছে বাংলাদেশিরা (২৭%)। গড়ে প্রায় ১৮% আবেদন বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এদের মধ্যেও বেশ কয়েকজনের সন্তান পর্তুগিজ নাগরিক হলেও তাদের স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনাগুলোর বেশিরভাগ ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ঘটেছে বলে জানা গেছে, যাদের সম্পর্কে SIS (Schengen Information System)-এর মাধ্যমে জানা গেছে যে তারা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে অনিয়মিতভাবে বসবাস করেছিলেন, পরে পর্তুগালে বৈধতার জন্য আবেদন করেছেন।
SIC Notícias জানিয়েছে, AIMA বারবার বলছে যে, তারা পর্তুগিজ সন্তান থাকা ব্যক্তিদের বহিষ্কারের নোটিশ পাঠায়নি। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ ধরনের ব্যক্তিদের তাদের কাগজপত্র হালনাগাদ করে অনলাইনে বা সরাসরি দপ্তরে জমা দিতে বলা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্সি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রও জানিয়েছে, তারা এমন কোনো নোটিশের তথ্য পায়নি। তাদের মতে, যেসব ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তারা মূলত SIS সতর্কবার্তায় শনাক্ত হয়েছেন।
অভিবাসীদের পাঠানো ইমেইলে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার সময়সীমা প্রয়োজনে বাড়ানো যেতে পারে। তবে নির্ধারিত সময়ে আপিল না করলে এবং দেশ না ছাড়লে তাদের “অবৈধ অবস্থান” হিসেবে আটক করা হতে পারে। SIC বলছে, ইমেইলে কোথাও উল্লেখ নেই যে, পর্তুগিজ সন্তান থাকলে বহিষ্কারের নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
