অনিয়মিত অভিবাসন ও মানবপাচার নিয়ন্ত্রণে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন চুক্তি সই করেছে তুরস্ক ও ইটালি। ইতালির রাজধানী রোমে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি এবং তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। তারা জানান, চুক্তিটি মানবপাচার ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ মোকাবিলায় দুই দেশের কোস্টগার্ডের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নিশ্চিত করবে।
তাজানি বলেন, “এই চুক্তি লিবিয়ার ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে, বিশেষ করে ইউরোপমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যাত্রা প্রতিরোধে।”
প্রতি বছর হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এদের জন্য লিবিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট দেশ। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৩১৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ২৬২ জন বাংলাদেশি নাগরিক, যা সর্বাধিক।
তাজানি আরও জানান, “ভূমধ্যসাগরে সক্রিয় অপরাধী চক্র ভাঙতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।”
হাকান ফিদান বলেন, তুরস্ক ইটালির সঙ্গে ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ আরও জোরদার করতে আগ্রহী। পাশাপাশি লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
আগস্টে ইস্তাম্বুলে অভিবাসন ও লিবিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে অংশ নিয়েছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদেলহামিদ দিবেইবা।
অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ে ২০১৬ সালে তুরস্কের সঙ্গে একটি চুক্তি করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইটালিও ছিল সে সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। তবে ওই চুক্তি নিয়ে সমালোচনা রয়েছে, কারণ এর আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্ককে শত কোটি ইউরো অনুদান দিয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল তুরস্ক থেকে ইউরোপমুখী অনিয়মিত অভিবাসীদের ঠেকানো এবং ফেরত নেওয়া।