ডলার কিনে দাম স্থিতিশীল রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক, রিজার্ভও বাড়ছে

Bangladesh Bank

অর্থ পাচার রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাম স্থিতিশীল রাখতে ডলার কিনছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ২৬টি ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতি ডলারের দাম নির্ধারিত হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত মোট ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কেনা হয়েছে। এর ফলে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে, অন্যদিকে ডলারের দামও ১২০ টাকার ওপরে থাকছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এখন প্রতিদিন দেশের বাণিজ্যিক অংশীদারদের মুদ্রার ওঠানামা এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের সরবরাহ–চাহিদা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ জন্য প্রতিদিন সকালে ডলারের রেফারেন্স রেট প্রকাশ করা হয়। কোনো কারণে বাজারে দাম কমে গেলে ডলার কেনার জন্য নিলাম ডাকা হচ্ছে।

জুলাই থেকে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত ডলার কিনে রিজার্ভে যোগ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার কার্যকর হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি শর্তও ছিল। আইএমএফের মানদণ্ড অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২ সাল থেকে ডলারের দাম বেড়ে যায়। ৮৫ টাকা থেকে দাম বাড়তে বাড়তে পৌঁছায় ১২২ টাকায়। মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চাপ পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। গত তিন অর্থবছরে ২৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি হয়েছে, যা মূলত জ্বালানি, সার ও খাদ্য আমদানির বিল মেটাতে ব্যবহার হয়।

গত বছরের আগস্টে সরকারের পতনের পর রিজার্ভ কম থাকায় সরকারি আমদানির জন্য ডলার সহায়তা বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ বছরের মার্চে রিজার্ভ বাড়া এবং ডলারের দাম কমতে শুরু করলে বাজার থেকে ডলার কেনা শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি দেশে ডলার-সংকট কাটাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। একই সময়ে রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ।