ইউরোপের বিমানবন্দরে বড় ধরনের সাইবার হামলা

Cyber Attack European Airports

ইউরোপের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে শুক্রবার রাতে বড় ধরনের সাইবার হামলার কারণে চেক-ইন ও বোর্ডিং সিস্টেম ভেঙে পড়ে।

কলিন্স এয়ারোস্পেসের চেক-ইন সফটওয়্যারে হামলার ফলে হিথ্রো, বার্লিন এবং ব্রাসেলসসহ একাধিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিলের ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা একটি “প্রযুক্তিগত সমস্যার” মুখোমুখি হয়েছে, যা যাত্রীদের বোর্ডিং প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রব জার্ডিন বলেন, “রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম হ্যাকার গোষ্ঠী পরিচালনা করে। জ্বালানি ও টেলিকম খাতে নাশকতার প্রমাণ আগেও পাওয়া গেছে। বিমানবন্দরগুলো উচ্চ প্রোফাইলের লক্ষ্য। চেক-ইন ও লাগেজ সিস্টেম অচল করা শুধু যাত্রীদের অসুবিধায় ফেলে না, এটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আস্থা নষ্ট করে এবং রাজনৈতিক চাপ তৈরি করে।”

হামলার সময়কালকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবার রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় ঢোকার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আচরণকে “বেপরোয়া ও উস্কানিমূলক” বলে নিন্দা জানান।

কলিন্স এয়ারোস্পেসের মূল প্রতিষ্ঠান RTX জানিয়েছে, তারা সমস্যার সমাধানে কাজ করছে এবং ম্যানুয়াল চেক-ইনের মাধ্যমে আংশিক সেবা চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে।

বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। কেউ কেউ তিন ঘণ্টারও বেশি সময় লাগেজ জমা দিতে পারেননি। ব্রাসেলসে যাত্রীদের অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা গেট পরিবর্তনের পরও কোনও ঘোষণা বা পানীয় সরবরাহ করা হয়নি।

বিশ্লেষক পল চার্লস জানান, “হামলাটি খুব কৌশলী। এটি একই সঙ্গে বহু বিমানবন্দর ও এয়ারলাইনের কার্যক্রম ব্যাহত করেছে।”

পূর্বে কলিন্স এয়ারোস্পেসকে ‘বিয়ানলিয়ান’ ও ‘এভারেস্ট গ্রুপ’ নামের হ্যাকার দল টার্গেট করেছিল। সম্প্রতি এভারেস্ট গ্রুপ বিএমডব্লিউর সিস্টেমেও হামলার দাবি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিওপলিটিকস ক্রমেই সাইবার স্পেসে চলে যাচ্ছে। ইউরোপের উচিত সাইবার প্রতিরক্ষা জোরদার করা, বিকেন্দ্রীকৃত সিস্টেম তৈরি করা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর স্থিতিশীলতা বাড়ানো।