আমাদের চোখের সামনেই একটি গণহত্যা চলছে—এটি এক লাইভস্ট্রিমড গণহত্যা

Greta Thunberg Arrested

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে পৌঁছান থুনবার্গ। সম্প্রতি গাজামুখী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। কয়েকদিন আটক থাকার পর মুক্তি পেয়ে এটাই তার প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য।

এই সফরের লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং গাজার চলমান মানবিক সংকট সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

এথেন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে থুনবার্গকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানায় স্থানীয় সমর্থকেরা। অনেকের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা। সেখানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, আসল বিষয় হলো—গাজায় ঘটে যাওয়া নির্মম বাস্তবতা।

তিনি বলেন,

“আমাদের আটক অবস্থায় কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা আমি বলতে পারি, কিন্তু সেটাই আসল গল্প নয়। আসল গল্প হলো—আমাদের চোখের সামনেই একটি গণহত্যা চলছে, যা সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে। আজ কেউ বলতে পারবে না যে তারা জানত না কী ঘটছে।”

থুনবার্গ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে সহিংসতা চালানোর’ অভিযোগ তুলে বলেন, “ইসরাইল একটি সম্পূর্ণ জাতিকে মুছে ফেলতে চাইছে।”
তিনি আহ্বান জানান, “গাজা, কঙ্গো, সুদান বা আফগানিস্তানের মতো কষ্টভোগী অঞ্চলগুলো থেকে বিশ্ব যেন চোখ না ফিরিয়ে নেয়।”

তার ভাষায়,

“আমি বুঝতে পারব না মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে—যারা বছরের পর বছর অবরোধ, নিপীড়ন ও বর্ণবৈষম্যের মধ্যে বন্দি।”

ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ হলো ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংহতির প্রতীক। তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে দেশটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”

গত সপ্তাহে ৪০টিরও বেশি নৌযানের ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ বহর আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থানকালে ইসরাইলি বাহিনী আটক করে। তিন দিনে মোট ৪৭৯ জন অধিকারকর্মীকে আটক করা হয়। সোমবার পর্যন্ত গ্রেটা থুনবার্গসহ ১৭১ জনকে ইসরাইল ফেরত পাঠিয়েছে। বাকিদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন, ইসরাইলি কারাগারে তাঁরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখে পড়েছিলেন।

বক্তব্যের শেষে থুনবার্গ বলেন,

“ইসরাইল গণহত্যা থেকে কোনো দায়মুক্তি পেতে পারে না। রাষ্ট্রগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা আছে এই গণহত্যায় তাদের সম্পৃক্ততা বন্ধ করার—জাতিসংঘ কমিশনারও এখন তা নিশ্চিত করেছে।”