দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাগামছাড়া হয়ে যাওয়ায় দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। কমিশনের মতে, বর্তমানে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১১০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছে, যা এই সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি।
বিটিটিসি গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্যসচিব ও কৃষিসচিবকে এক চিঠিতে জানায়, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কিছু মধ্যস্বত্বভোগী অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করছে। তাই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং ভোক্তাদের যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সীমিত পরিমাণে আমদানির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান বলেন, “এই সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকার মধ্যে থাকার কথা থাকলেও তা বেড়ে ১১৫ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশে পেঁয়াজের দাম মাত্র ৩০ টাকার মতো। তাই আমদানির অনুমতি দিলে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং অস্থিতিশীলতা কমবে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পেঁয়াজের উচ্চ মূল্যের সুবিধা কৃষকরা পাচ্ছেন না; বরং মধ্যস্বত্বভোগীরাই লাভবান হচ্ছেন। পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলে এই প্রভাব হ্রাস পাবে এবং সাধারণ ভোক্তা ন্যায্য দামে পণ্যটি কিনতে পারবেন।
গত অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও সংরক্ষণ সমস্যা ও নষ্ট হওয়ার কারণে বাজারে আসে প্রায় ৩৩ লাখ টন। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যায়, যা দামের ঊর্ধ্বগতির অন্যতম কারণ।
বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস দেশ ভারত, যেখান থেকে মোট ৯৯ শতাংশ পেঁয়াজ আসে। এছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর থেকেও কিছু পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হয়। গত অর্থবছরে দেশে মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর মোট ১০ শতাংশ শুল্ককর প্রযোজ্য।
প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। তাই বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিটিটিসি এবার আগাম আমদানির অনুমতির পরামর্শ দিয়েছে।
