আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসের মধ্যেই প্রাক–প্রস্তুতি শেষ করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
তবে গণভোট সংক্রান্ত প্রস্তুতি এখনো শুরু করেনি সাংবিধানিক এই সংস্থা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে ইসি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আয়োজনের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে গণভোটের সময় নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকায় কমিশন নিজ থেকে কিছু বলতে চায় না। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গণভোট সংসদ নির্বাচনের দিন একসঙ্গে হলে প্রস্তুতি তুলনামূলক সহজ হবে, তবে আগে করলে খরচ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কর্মকর্তা ও ব্যালট বাক্সের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এবারের নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররাও অংশ নিতে পারবেন। তাঁরা ভোট দেবেন পোস্টাল ব্যালটে। এজন্য ইসির একটি বিশেষ অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে, যা উদ্বোধন হবে ১৮ নভেম্বর।
ইতিমধ্যে ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটার তালিকা তৈরি, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ বড় অংশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৭৬ লাখ।
ইসি ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র ও ২ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করেছে। গণভোট একসঙ্গে হলে ভোটকক্ষের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে।
নতুন তিনটি রাজনৈতিক দল—**জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)**সহ—নিবন্ধনের প্রক্রিয়া চলছে, আর ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেছে ইসি, এবং তফসিল ঘোষণার পর আরও সমন্বয় সভা হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, “আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। গণভোটের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।”
এদিকে, গণভোটের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। বিএনপি চায় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হোক, অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চাইছে নির্বাচনের আগেই গণভোট অনুষ্ঠিত হোক।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “গণভোটের বিষয়ে এখনো সরকারের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। আপাতত আমাদের মূল মনোযোগ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিতেই।”
