ডেনমার্কে শিক্ষার্থী ভিসা ইস্যু নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি নিযুক্ত অভিবাসনমন্ত্রী রাসমুস স্টকলুন্ডকে এ বিষয়ে সংসদে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানা গেছে।
শত শত এশীয় শিক্ষার্থী, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে আগতরা, শিক্ষার্থী ভিসা স্কিমের মাধ্যমে ডেনমার্কে প্রবেশ করেছেন। এই তথ্য প্রকাশের পর দেশটির মধ্যপন্থি সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। অনেকের মতে, ঘটনাটি কোপেনহেগেনের কঠোর অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের ফাটল ধরাতে পারে।
ইউর্যাক্টিভ সংবাদমাধ্যম জানায়, অভিবাসনমন্ত্রী স্টকলুন্ডের মতে, ‘‘ডেনমার্কের অভিবাসন নীতির লক্ষ্য হচ্ছে ইউরোপ থেকে যত বেশি সম্ভব মানুষকে ফেরত পাঠানো।’’ তবে সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী ভিসা বিতর্ক সেই অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ডেনিশ মিডিয়া জানিয়েছে, ২০১৯ সালে যেখানে নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে মাত্র ১৯০ জন শিক্ষার্থী এসেছিল, গত বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,১৪৬ জনে — অর্থাৎ দশগুণ বৃদ্ধি। বিরোধী দলগুলো, যেমন লিবারেল অ্যালায়েন্স ও ডেনিশ পিপলস পার্টি, সরকারের বিরুদ্ধে অভিবাসন নীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর অভিযোগ তুলেছে এবং তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
রসকিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড চেয়ারম্যান কারস্টেন টফ্ট বোসেন পদত্যাগ করেছেন, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিরস্কার করে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাজ নয় অভিবাসন নীতি নির্ধারণ করা।’’
সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে ২০২৬ সাল থেকে নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর হবে, যার মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গীদের ডেনমার্কে আনতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে বিরোধীরা বলছে, এটি কেবল ‘‘সাময়িক সমাধান’’ এবং তারা আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি করছে।
ডেনিশ পিপলস পার্টির এমপি মিকেল বিয়র্ন বলেছেন, ‘‘যাদের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে, তাদের দ্রুত ডিপোর্ট করা উচিত।’’
অন্যদিকে মানবাধিকার কর্মীরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশনের ৮ নম্বর ধারার (পারিবারিক জীবনের অধিকার) লঙ্ঘন হতে পারে।
গ্রিন লেফট পার্টির এমপি সোফি লিপার্ট মন্তব্য করেন, ‘‘সিস্টেমকে ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থী ভিসাকে অপব্যবহার করা উচিত নয়, তবে বিষয়টি মানবিকভাবেও দেখতে হবে।’’
এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত, ডেনমার্কের অভিবাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
