জুলাই গণ-অভ্যুত্থয়ের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগের রাতে রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানীর সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা; দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে সেন্ট্রাল রোডে পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে মোটরসাইকেলযোগে আসা হেলমেট পরা এক ব্যক্তি টানা দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি সিসিটিভিতে ধরা পড়ে। বোম্ব স্কোয়াড ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ডিএমপি নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর কবির জানান, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্তে কাজ চলছে।
বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, মতিঝিল টিএন্ডটি বাসস্ট্যান্ড, কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারা, ফার্মগেট রেলক্রসিং—সবখানেই একই ধরনের নাশকতা সংঘটিত হয়। ফার্মগেটে চলন্ত ট্রেনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় এক সন্দেহভাজনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মধ্য বাড্ডায় একটি বাসে আগুন দেওয়া হয় এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ডাম্পিংয়ে থাকা দুটি লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কিশোরগঞ্জের স্টেশন রোডে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখার নিচতলায় আগুন লাগানো হয়। পাকুন্দিয়ায় গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করে দুর্বৃত্তরা।
গাজীপুরের টঙ্গীতে বিআরটি ফ্লাইওভারের ওপরে থেকে সড়কে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।
ধামরাইয়ের ঢুলিভিটায় মোটরসাইকেলে আসা ব্যক্তিরা বাসে আগুন দেয়।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণে দুই রিকশাচালক আহত হন। রাত ১০টার দিকে ‘অদম্য ৭১’ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে পরপর দুটি বিস্ফোরণ এবং পরে পৌর সুপার মার্কেটের সামনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে।
আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের বেঞ্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করবেন। রায়কে ঘিরে ট্রাইব্যুনাল এলাকা, দোয়েল চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী সাঈদ জানান, নাশকতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘Seen on spot—shoot as per law’ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “বাসে আগুন দেওয়া, ককটেল নিক্ষেপ বা পুলিশের ওপর হামলা—এসব ঘটনায় আইন অনুযায়ী গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
