চব্বিশের অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ এবং তাদের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন স্থগিত করেছে—এ কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আবারও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস-মিনিস্টার পাসকাল্লে গ্রোটেনহুইসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে নির্বাচন-সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কৃষি, বাণিজ্য, প্রযুক্তি, যুব উন্নয়ন, নারী উদ্যোক্তা এবং সামাজিক ব্যবসা তহবিলসহ নানা সহযোগিতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণেও দুই পক্ষ মতবিনিময় করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি “অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর” জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আগামী নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক তরুণ-তরুণী প্রথমবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আগের স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি কারচুপির নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “আন্দোলনের সময় যারা ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে দেয়ালচিত্র ও গ্রাফিতি এঁকেছিল, সেই তরুণরাই এখন ভোট দিতে আসবে। এটি আমাদের সবার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
সৌজন্য সাক্ষাতে পাসকাল্লে গ্রোটেনহুইস বাংলাদেশের চলমান নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রশংসা করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে সময় সীমিত হলেও প্রস্তুতি প্রশংসনীয়। তিনি বাংলাদেশের নতুন শ্রম আইনকেও সমর্থন করে বলেন, “এই আইন আরও বেশি ডাচ ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়তা করবে।”
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর সোমবার সংশোধিত শ্রম আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে।
বৈঠকে ডাচ উপমন্ত্রী জানান, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (PPP) বিষয়ে নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নতুন একটি সমঝোতা স্মারক সই করার পরিকল্পনা করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই এ চুক্তি সই হবে এবং বাংলাদেশে ডাচ বিনিয়োগ বৃদ্ধির নতুন পথ তৈরি হবে।
“৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন সহযোগী। এখন আমরা এই সম্পর্ককে রাজনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে একটি সমতাভিত্তিক অংশীদারত্বে রূপান্তর করতে চাই,” বলেন উপমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির পাশাপাশি ডাচ কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এবং কাজের অংশীদার হতে আগ্রহী।
