দেশে মোবাইল ফোন চুরি ও অবৈধ আমদানি রোধে নির্ধারিত ‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)’ সিস্টেম চালুর তারিখ আবারও পেছানো হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পূর্বঘোষিত ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে এনইআইআর কার্যকর হবে।
সোমবার বিকেলে বিটিআরসির জনসংযোগ বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সব মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীর কাছে যেসব আমদানিকৃত হ্যান্ডসেট এখনো অবিক্রিত বা মজুদ রয়েছে, সেগুলোর আইএমইআইসহ প্রয়োজনীয় তথ্য এনইআইআর সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আগে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবে অনেক ব্যবসায়ী এখনো নির্ধারিত ফরম্যাটে তথ্য জমা দিতে না পারায় সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত মাইক্রোসফট এক্সেল ফরম্যাটে আইএমইআই ও সংশ্লিষ্ট তথ্য এনইআইআর সিস্টেমে জমা দেওয়ার জন্য সব মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি।
এদিকে মোবাইল ফোনের দাম কমিয়ে আনতে দেশে উৎপাদন ও আমদানি—উভয় ক্ষেত্রেই কর ছাড় দিতে রাজি থাকার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, বিশ্বের খুব কম দেশেই ট্রেডের ওপর এত বেশি কর আরোপ করা হয়, যতটা বাংলাদেশে করা হয়। এ কর আরোপ মূলত রাজস্ব আদায়ের চেয়ে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার জন্যই বেশি করা হয়ে থাকে।
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, এনইআইআর চালুর ফলে গ্রে মার্কেট থেকে আসা হাই-এন্ড ফোনগুলো ফরমাল চ্যানেলে আসবে। এতে কর ছাড় দেওয়া হলেও দীর্ঘমেয়াদে সরকারের রাজস্ব বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় মোবাইল শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমদানি শুল্ক বেশি রাখা হয়। তবে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা ও বাজারে মোবাইল ফোনের দাম কমাতে প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক ও উৎপাদন—দুই ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হবে।
বর্তমানে দেশে স্মার্টফোনে আমদানি শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মিলিয়ে প্রায় ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ কর আরোপ রয়েছে। উৎপাদন ও সংযোজনের ধরনভেদে এই হার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
উল্লেখ্য, এনইআইআর চালুর বিরোধিতা করে সম্প্রতি মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভে নামেন। এনইআইআর কার্যকর হলে অবৈধভাবে আমদানিকৃত ও বিদেশ থেকে আনা পুরোনো ফোন আর ব্যবহার করা যাবে না। এ প্রেক্ষাপটে গত ডিসেম্বরে বহুপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে অবৈধ ফোন ব্যবহারে তিন মাসের জন্য ছাড় দেয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
