হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের হাত থেকে বল ফসকে গিয়েছিল বাউন্ডারি লাইনের খুব কাছেই। এক রানের জায়গায় তখন দৌড়ে দুই রান নিশ্চিত করেছেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন। স্ট্রাইক প্রান্তের ক্রিজ ছুঁয়েই নাজমুল ছুটতে শুরু করেন আরও সামনে—ব্যাটে চুমু দিয়ে উদ্যাপন জানান নিজের তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আনন্দ।
এই সেঞ্চুরি শুধু ব্যক্তিগত মাইলফলক নয়, রাঙিয়ে দেয় রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বড় জয়ও। ১০১ রানে অপরাজিত থেকে নাজমুল হোসেন মাঠ ছাড়েন সিলেট টাইটানসের বিপক্ষে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সকে ৮ উইকেটে জয় এনে দিয়ে।
নাজমুলের এই সেঞ্চুরিটা আরও বিশেষ হয়ে ওঠে তাঁর সাম্প্রতিক কঠিন সময়ের কারণে। গত বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র পাঁচ ম্যাচে। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে শুনতে হয়েছিল দুয়োধ্বনিও। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সেই সব কিছুর জবাব দিলেন ব্যাট হাতে।
১৯০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীর ইনিংসে ৪৩ রানে দুই উইকেট পড়ার পর মাঠে নামেন নাজমুল। এরপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে গড়ে তোলেন ৭১ বলে ১৩০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি। মাত্র দুই বল হাতে রেখেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তাঁরা। ৬০ বলের ইনিংসে ১০টি চার ও ৫টি ছক্কায় নাজমুল করেন ১০১ রান, যা তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি।
রাজশাহীর জয়ে বড় অবদান রাখেন মুশফিকুর রহিমও। নিলামে প্রথম ডাকে অবিক্রীত থাকা এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান খেলেন ৩১ বলে অপরাজিত ৫১ রানের কার্যকর ইনিংস। তাঁর ব্যাটে আসা বাউন্ডারিতেই নিশ্চিত হয় রাজশাহীর জয়।
এর আগে ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষে মনে হচ্ছিল মঞ্চটা সাজানো পারভেজ হোসেনের জন্যই। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেট টাইটানসকে দুই শর কাছাকাছি নিয়ে যান তিনি। চার নম্বরে নেমে ৩৩ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৬৫ রান করেন পারভেজ। ২৫ বলে ৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটির ওপর দাঁড়িয়ে তাঁর এই ইনিংস সিলেটের বড় স্কোরের ভিত্তি গড়ে দেয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট টাইটানস:
২০ ওভারে ১৯০/৫
(পারভেজ ৬৫*, রনি ৪১, আফিফ ৩৩, সাইম ২৮; লামিচানে ২/২৮, বিনুরা ১/৩১)
রাজশাহী ওয়ারিয়র্স:
১৯.৪ ওভারে ১৯২/২
(নাজমুল ১০১*, মুশফিক ৫১*; খালেদ ১/৩০)
ফল: রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন
