ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে গড়ে ওঠা নির্বাচনী সমঝোতার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মাঠপর্যায়ের প্রার্থিতায়। এর অংশ হিসেবে কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম (শহিদ) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এই আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এনসিপি ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমমনা আরও আটটি দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় জোটের শীর্ষ নেতাদের এক সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কুমিল্লা-৪ আসনে এই সমঝোতার বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়। জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান।
সাইফুল ইসলাম কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি। কুমিল্লা-৪ আসনটি এনসিপির মনোনীত প্রার্থী হাসনাত আবদুল্লাহর নিজ এলাকা। উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর এনসিপির নেতা-কর্মীরা জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। একই সময়ে জামায়াতের পক্ষ থেকেও এই আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে রোববার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সাইফুল ইসলাম লেখেন,
‘আলহামদুলিল্লাহ। কেন্দ্রীয় সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে আড়াল করে নিলাম। আল্লাহ যেন দ্বীন কায়েমের পথে আমৃত্যু টিকে থাকার তৌফিক দান করেন।’
পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংগঠন থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, সেটিকে স্বাগত জানিয়ে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আমাদের কর্মীদের ত্যাগের জন্য মহান রবের কাছে দোয়া করি। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আমি দেবীদ্বারের মানুষের পাশে সব সময় থাকব। হয়তো জনগণের প্রত্যাশা পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে পারব না, তবে সংগঠনের সিদ্ধান্ত কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামীর এই নির্বাচনী সমঝোতার ফলে কুমিল্লা-৪ আসনে নির্বাচনী সমীকরণ নতুন মাত্রা পাচ্ছে এবং ভোটের মাঠে ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি হতে পারে।
