পর্তুগালে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কাজগুলোতে পেশাগত সীমাবদ্ধতার বিরুদ্ধে এবার সরব হয়েছেন একদল অভিজ্ঞ আইনজীবী। রাজধানী লিসবনের আইএআইএ (AIMA) অফিসের সামনে এক ব্যতিক্রমধর্মী শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেন তারা, যেখানে দাবি উঠেছে— “নতুন যুগের অভিবাসন প্রক্রিয়া, পুরনো আমলের অদক্ষতা দিয়ে চলবে না।”
ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত আইনজীবী ইলাইন লিনহারেস, যিনি ছয় বছর ধরে পর্তুগালে অভিবাসী আইনের অধীনে কাজ করছেন, তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কোনো রকম প্রাতিষ্ঠানিক সম্মান বা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। একজন আইনজীবী হিসেবে আমরা কোনো প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারছি না—এটা শুধু আমাদের নয়, অভিবাসীদেরও মৌলিক অধিকারের অবমাননা।”
প্রতিদিন ১০টি টিকিট, হাজারো সমস্যা
লিসবনের AIMA অফিসে প্রতিদিন মাত্র ১০টি ‘পাসওয়ার্ড’ বা সিরিয়াল টিকিট বরাদ্দ থাকে আইনজীবীদের জন্য। ফলে, অনেকে রাত ৩টা বা ৪টায় এসে দাঁড়ালেও টিকিট পান না। অফিস খোলে সকাল ৯টায়, কিন্তু তার অনেক আগেই লাইন শেষ।
এক আইনজীবী জানান, “আমাদের এক সহকর্মী এলগারভ থেকে রাত ৪টায় এসেও ভিতরে ঢোকার সুযোগ পাননি। ভাবুন তো, একজন আইনজীবী যদি এমন হয়রানির শিকার হন, তাহলে সাধারণ মানুষদের কী অবস্থা?”
কমিউনিকেশন গ্যাপ: ইমেইল ডিলিট, কল সেন্টার নিশ্চুপ
আইএআইএ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো—“কোনো ধরণের যোগাযোগ কাজ করে না।” ইমেইল পাঠানো হলে সেটি ডিলিট হয়ে যায়, ফোন করলে কেউ ধরে না, এমনকি ডাকযোগে পাঠানো চিঠিরও কোনো জবাব মেলে না।
আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন—এই প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার ফলে হাজারো অভিবাসী পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড বা বৈধ পরিচয়পত্র না পেয়ে কার্যত রাষ্ট্রহীন অবস্থায় বসবাস করছেন।
ইলাইন বলেন, “এই মানুষগুলো কর দিচ্ছেন, শ্রম দিচ্ছেন, অথচ বিনিময়ে রাষ্ট্র তাদেরকে একটি পরিচয়ের নিশ্চয়তাও দিচ্ছে না। তারা যেন একটি ‘অদৃশ্য শ্রেণি’তে পরিণত হয়েছেন।”
“অভিযোগ বই” নেই, সাদা কাগজে লিখে অভিযোগ!
আন্দোলনের আরেক সংগঠক প্যাট্রিসিয়া ভিয়ানা অভিযোগ করেন, “আমরা অভিযোগ করতে চাইলাম, কিন্তু অফিসে কোনো ‘কমপ্লেইন্ট বুক’ নেই, যা পর্তুগালের প্রতিটি সরকারি দপ্তরে থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারা আমাদের একটি সাদা কাগজ দিয়ে বলে, এখানে লিখে দিন!”
আইএআইএ’র দায়িত্বশীলদের কাছে এই প্রতিবাদ ও দাবিগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।