বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের অবহেলা ও বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “উপদেষ্টাদের নিয়ে একবার সড়কপথে সিলেট ঘুরে দেখুন, তবেই বুঝতে পারবেন বাস্তব চিত্র।”
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর কুমারপাড়াস্থ নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “এখন আর চুপ করে থাকার সময় নয়। সিলেটের জনগণের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্য আজ সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের টানা ১৫–১৭ বছরের শাসনামল পার হলেও সিলেট ন্যায্য উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল, আর এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও একই পথে হাঁটছে।”
তিনি জানান, এ অবিচারের প্রতিবাদে রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর কোর্ট পয়েন্টে এক ঘণ্টার প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
আরিফুল বলেন, “সিলেট–ঢাকা মহাসড়কের অবস্থা এখন করুণ। বছরের পর বছর ধরে সংস্কার কাজ চলছে, কিন্তু অগ্রগতি নেই। প্রতিদিন মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকে। এতে সময় নষ্ট হচ্ছে, দুর্ঘটনা বাড়ছে, ব্যবসা–বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাঘাটের অচলাবস্থার কারণে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ বেড়ে গেছে, ফলে নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, “রেলপথেও একই চিত্র। সময়মতো ট্রেন আসে না, কোচগুলো পুরনো ও জরাজীর্ণ। বিমানের ভাড়াও অস্বাভাবিকভাবে বেশি। তিন পথেই সিলেটবাসী বৈষম্যের শিকার।”
সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এসব সমস্যার সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। সিলেটে না এসে সরকার প্রধান সিলেটের জনগণকে অবহেলা করেছেন।”
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথমবার, যখন কোনো সরকার প্রধান সিলেটে একবারের জন্যও আসেননি। অতীতে সব সরকারপ্রধানই ওলি-আউলিয়াদের মাজার জিয়ারতের জন্য হলেও সিলেটে এসেছেন। কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্যও ভঙ্গ হয়েছে।”
শেষে আরিফুল হক চৌধুরী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি আহ্বান জানাচ্ছি—অন্তত একবার উপদেষ্টাদের নিয়ে সড়কপথে সিলেট ঘুরে দেখুন, তবেই বাস্তব চিত্রটি বুঝতে পারবেন।”