ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তবে পদত্যাগের পর জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন—এমনটি ধরে নেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, “উপদেষ্টা বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আছেন—এমন যে কেউ যদি রাজনীতি করতে চান বা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাহলে তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত। এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না এবং নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন আমরা ইতিহাসের অন্যতম সেরা নির্বাচন উপহার দিতে চাই। আমরাও সেটাই চাই। যেহেতু আমরা এই সরকারের অংশ, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে এর দায়ও আমাদের ওপর বর্তাবে।”
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন, যিনি গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও ভারতে চলে যাওয়ার পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারে আসিফ ছাড়াও ছাত্র আন্দোলনের দুই সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলাম ও মাহফুজ আলম উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান।
নাহিদ ইসলাম পরে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হন। বর্তমানে আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করছেন, আর মাহফুজ আলম আছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক অতীত থাকা অন্যান্য উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদেরও তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তাঁর ভাষায়, “যাঁদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিচয় আছে এবং সামনেও রাজনীতি বা নির্বাচন করার ইচ্ছা রয়েছে—তাঁদের সবাইকে স্বচ্ছ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিতে পদত্যাগ করা উচিত।”
এনসিপিতে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি এনসিপিতে যোগ দেব—এমনটা এখনই ধরে নেওয়া উচিত নয়। বিষয়টি বিবেচনা করব।”
সরকারের এক বছরের কার্যক্রমের মূল্যায়নে আসিফ মাহমুদ বলেন, “এখন পর্যন্ত না পারার পাল্লাটাই ভারী। গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে অনেক কিছু পূরণ হয়নি, তবে অর্থনীতিতে উন্নতি হয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে। শেষ পর্যন্ত মূল্যায়ন জনগণই করবে।”