এসাইলাম সিকারদের জন্য স্থায়ী থাকার সুযোগ শেষ!

uk new asylum policy shabana mahmud

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রাপ্ত ব্যক্তিদের আর স্থায়ীভাবে দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। সোমবার নতুন নীতি পরিবর্তনের এই ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, স্থায়ী সুরক্ষার সুযোগ বন্ধ হলে আশ্রয় আবেদন কমবে এবং ছোট নৌকায় করে অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের প্রবণতাও হ্রাস পাবে।

নতুন নীতিতে সফল আশ্রয়প্রার্থীদের কেবল অস্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় পরপর তাদের স্ট্যাটাস পর্যালোচনা করা হবে। ব্যক্তির নিজ দেশে পরিস্থিতি নিরাপদ হলে তাকে যুক্তরাজ্য ছাড়তে হবে। বর্তমানে পাঁচ বছর আশ্রয়ে থাকার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার অনুমতি (ILR) এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে পথ রয়েছে, তা বন্ধ হয়ে যাবে।

এখন পর্যন্ত শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা লোকজনের জন্য তিন বছর মেয়াদি অস্থায়ী স্কিম চালু আছে, যা পরে বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো সব সফল আশ্রয়প্রার্থীকেই অস্থায়ী স্ট্যাটাসে রাখা হবে। সরকারি মহল এটিকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতির “গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক পরিবর্তন” হিসেবে বর্ণনা করছে।

এই নীতির কাঠামো নেওয়া হয়েছে ডেনমার্কের অভিবাসন মডেল থেকে। ডেনমার্কে সাধারণত শরণার্থীদের দুই বছরের অস্থায়ী বাসস্থান দেওয়া হয়, যার মেয়াদ শেষে নতুন করে আবেদন করতে হয়। সেখানে নাগরিকত্ব পাওয়ার পথও দীর্ঘ ও কঠিন করা হয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত স্বয়ংক্রিয় অনুমানও বাতিল করা হয় বেশ কিছু বছর আগে। এ কারণে ইউরোপের কঠোরতম অভিবাসন নীতির মধ্যে অন্যতম দেশ হিসেবে পরিচিত ডেনমার্ক।

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের মতে, ডেনমার্কে সমাজতান্ত্রিক নেতৃত্ব কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণের পর ভোটারদের সমর্থন পেয়েছে, আর পপুলিস্ট দলগুলোর জনপ্রিয়তা কমেছে। ফলে ব্রিটেনেও একই কৌশলের প্রভাব পড়বে বলে আশা করছেন নীতিনির্ধারকরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ জানিয়েছেন, লেবার সরকার যদি কঠোর ও বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে “অন্ধকার শক্তি”—অর্থাৎ চরমপন্থী ও পপুলিস্ট রাজনীতি—যুক্তরাজ্যে উত্থান ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ও অভিবাসন ব্যবস্থায় এটি গত বহু বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় রূপান্তর হতে যাচ্ছে।