একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ও বিভিন্ন মেয়াদের সাজা বাতিল করে দেন। আদালতের সাত সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দেন।
২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মুক্তিযুদ্ধকালীন ছয়টি ঘটনায়—গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে আজহারুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। তবে গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তা বাতিল হয়।
এই রায়কে বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিলে এই প্রথম কেউ খালাস পেলেন।
আজহারুল ইসলাম প্রথম দফায় ২০১৯ সালে আপিল করেন, তবে তৎকালীন আপিল বিভাগ তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের আগস্টে তিনি দ্বিতীয় দফায় আপিল করেন। সেই আপিলেই তিনি খালাস পেলেন।
আদালতের রায় ঘোষণার পর দুপুরে বিচারপতিদের স্বাক্ষর শেষে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয় এবং সেই অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আজহারুল ইসলামের মুক্তির আদেশ জারি করা হয়।
