বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় যাত্রীরা পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী ও গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনেন। এসব পণ্য আনার সুবিধার্থে সরকার ‘ব্যাগেজ রুল’ নামে বিশেষ একটি নীতি চালু রেখেছে, যাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ও সীমার মধ্যে থাকা পণ্যে শুল্ক ও কর মাফ করা হয়। প্রতি কয়েক বছর পরপর এই নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে।
বাজেট অনুযায়ী, এখন থেকে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৬৫ কেজি ওজনের পণ্য শুল্ক ও কর ছাড়া আনতে পারবেন। এর নিচের বয়সী যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ওজনসীমা হবে ৪০ কেজি। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত ব্যবহারের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি সামগ্রী এবং সীমিত পরিমাণের ধাতব অলঙ্কার ও ইলেকট্রনিকস পণ্য। শুল্কমুক্তভাবে যাত্রীরা প্রতিবছর একটি নতুন মোবাইল ফোন ও দুটি ব্যবহৃত মোবাইল আনতে পারবেন। একইভাবে, ছোট আকারের টেলিভিশন, ল্যাপটপ, ভিডিও ক্যামেরা, ওভেন, কফি মেকার, ফ্যান, খেলাধুলার জিনিসপত্র ও মিউজিক সিস্টেম আনার সুবিধা পাবেন তারা। তবে এসব পণ্য হতে হবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য।
অন্যদিকে, নির্দিষ্ট শুল্ক ও কর পরিশোধ করে আরও কিছু পণ্য আনার অনুমতি মিলবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সোনার বার, বড় আকারের টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, হোম থিয়েটার, ঝাড়বাতি এবং ওয়াশিং মেশিনের মতো ভারী ও বিলাসপণ্য। সোনার বারের ক্ষেত্রে এবারের বাজেটে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন, যার জন্য প্রতি ভরিতে ৫ হাজার টাকা হারে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে যতবার খুশি বিনা শুল্কে সোনার গয়না আনতে পারতেন যাত্রীরা। এখন সেই সুবিধা বছরে একবার এবং সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সীমিত করা হয়েছে।
ব্যাগেজ রুলের আওতায় এসব পণ্য আনার জন্য আলাদা কোনো ঋণপত্র বা এলসি খোলার প্রয়োজন নেই। ফলে প্রবাসফেরত ও বিদেশ ভ্রমণ শেষে দেশে ফেরা নাগরিকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে পণ্যে বৈচিত্র্য বজায় থাকবে এবং একইসঙ্গে শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ব্যাগেজ রুল নিয়মিত হালনাগাদ করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। এবারের বাজেট সে দাবি কিছুটা হলেও পূরণ করেছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।