দীর্ঘ ৫৫ মাস পর আবারও ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের উত্তাপ। আর এই প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে জয় দিয়েই মঞ্চে ফিরল বাংলাদেশ। বুধবারে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোল ব্যবধানে হারিয়েছে জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন লাল-সবুজের দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ মিনিটেই আসে কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত—ক্যাপ্টেন জামাল ভূঁইয়ার নেওয়া কর্নার থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মিডফিল্ডার হামজা। এটি ছিল জাতীয় দলের জার্সিতে হামজার দ্বিতীয় ম্যাচ এবং প্রথম গোল। তার এই গোলেই গর্জে ওঠে স্টেডিয়ামের গ্যালারি, চারদিকে ধ্বনিত হতে থাকে “বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!”
২৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ফাহমিদুলের শট এবং ফিরতি বল থেকে জামালের প্রচেষ্টা আটকে দেন ভুটানের গোলরক্ষক জিয়েলশেন জাংপো। এরপর ৩৫ মিনিটে আরও একবার নিশ্চিত গোল বাঁচান জাংপো, যখন তাজ উদ্দিনের ক্রস থেকে জামাল শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন ভুটানের ভুটানের গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের শেষে ১-০ গোলেই এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ।
বিরতির পর খেলার গতি আরও বাড়ায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধের ৪৭ মিনিটে সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন বদলি খেলোয়াড় শেখ মোরসালিন। তবে দুই মিনিট পরেই গ্যালারি আবারও উৎসবে মেতে ওঠে। ৪৯ মিনিটে বাঁ পায়ের এক দূরপাল্লার দুর্দান্ত শটে গোল করেন মিডফিল্ডার সোহেল রানা। গোলরক্ষক জাংপো শুধুই দৃষ্টিনন্দন লাফ দিতে পেরেছেন, বল ঠেকাতে পারেননি।
৭৩ মিনিটে ভুটান গোল ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেলেও গোলরক্ষক মিতুল মারমার চমৎকার সেভে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ৭৭ মিনিটেও আরেকটি হেড গোলবারের ওপর দিয়ে গেলে হাফ ছেড়ে বাঁচে গ্যালারি।
৯০ মিনিটে ভুটানের গোলরক্ষক জাংপো ফের দুর্দান্ত এক সেভ করেন, মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নেওয়া দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে। আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ম্যাচের অন্যতম সেরা মুহূর্ত—ভুটানের জিগমে নামগিয়ালের এক অনবদ্য সুযোগ দুর্দান্ত সেভ করে আটকে দেন গোলরক্ষক মিতুল।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ২-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার মুখে হাসি, কারণ ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনেই তিনি বলেছিলেন, প্রতিপক্ষ ভুটানের কাছে আগের হারের প্রতিশোধ নেবেন। সেই প্রতিশোধ পূর্ণ হলো, ফুটবলের ফেরার উৎসবও জমল জাতীয় স্টেডিয়ামে।