হামজার জোড়া গোলেও জয় পেল না বাংলাদেশ, নেপালের সঙ্গে নাটকীয় ড্র

Hamza Goal

জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল অর্ধেক খালি। মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ আসন পূর্ণ হয়েছিল। সিঙ্গাপুর ও হংকং ম্যাচের মতো দর্শকের গর্জনও শোনা যায়নি তেমন। নেপালের বিপক্ষে আজ রাতের প্রীতি ম্যাচে গ্যালারি ছিল তুলনামূলক নিশ্চুপ।

প্রথমার্ধে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে হামজা চৌধুরীর জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু যোগ করা সময়ে অনন্ত তামাংয়ের গোলে নাটকীয়ভাবে জয় হাতছাড়া হয়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ হয় ২-২ সমতায়।

ম্যাচের ২৯ মিনিটে প্রথম গোল করে নেপাল। প্রতি–আক্রমণে সুমিত শ্রেষ্ঠর কাটব্যাক থেকে রোহিত চাঁদের শটে এগিয়ে যায় তারা। এটি ছিল রোহিতের জাতীয় দলের দ্বিতীয় গোল। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ পরিকল্পনামতো খেলতে পারেনি, মাঝমাঠে ছন্দ ছিল না, সৃজনশীল পাসের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট।

বিরতির পর জুনিয়র সোহেল রানার জায়গায় নামানো হয় শমিত সোমকে। পরিবর্তনের পরপরই বদলে যায় খেলার দৃশ্য। ৪৭ মিনিটে ফয়সাল আহমেদের ক্রস থেকে নেপালের ডিফেন্ডারের হেড ভুলে যায় বক্সের ওপর। জামালের ফেলা বলে দারুণ বাইসাইকেল কিকে গোল করে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান হামজা চৌধুরী (১-১)।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। সেটি থেকে গোলরক্ষককে ভুল পথে পাঠিয়ে সহজেই দ্বিতীয় গোল করেন হামজা (২-১)।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাত্র পাঁচ মিনিটেই ১-০ থেকে ২-১ এ এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে হামজা চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে দল হারায় নিয়ন্ত্রণ। ৮০ মিনিটে তাঁকে বদলে নামানো হয় কিউবা মিচেলকে, যার এটি ছিল জাতীয় দলে অভিষেক ম্যাচ।

যখন দর্শকেরা পাঁচ বছর পর নেপালকে হারানোর আনন্দে মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে অনন্ত তামাংয়ের টোকার গোল সমতায় ফেরায় নেপালকে (২-২)।
শেষ মুহূর্তের এই গোল আবারও ব্যথিত করেছে সমর্থকদের, ঠিক সিঙ্গাপুর ও হংকং ম্যাচের মতো।

জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য প্রেসবক্সে বসে বলেন, “হামজা ম্যাজিকে জয় দেখছিল বাংলাদেশ, কিন্তু হলো না। মাঝমাঠে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স আসেনি, দল কিছুটা অগোছালো খেলেছে।”

হামজা চৌধুরীর জাতীয় দলে এটি ছিল ষষ্ঠ ম্যাচ, যেখানে তাঁর গোল সংখ্যা দাঁড়াল চার। প্রথমার্ধে তাঁকে টেনে রাখা নেপাল দ্বিতীয়ার্ধে সামাল দিতে পারেনি।

বাংলাদেশ সর্বশেষ নেপালকে হারিয়েছিল ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর, স্কোরলাইন ছিল ২-০। এরপর পাঁচ বছরে দুই দলের মধ্যে চারটি ম্যাচ হয়েছে—নেপাল দুটি জয় পেয়েছে, বাকি দুটি ড্র। আজকের ম্যাচেও জয়ের সুযোগ হারিয়ে গেল বাংলাদেশের।

হাভিয়ের কাবরেরার দল ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই ম্যাচ খেলেছিল। কিন্তু নেপালের বিপক্ষে জয়হীনতা থেকে গেছে। শেষ মুহূর্তে গোল খাওয়ার অভ্যাস কাটাতে না পারলে সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে লাল-সবুজদের জন্য।