কোরবানির ঈদের আগেই স্বস্তির বার্তা, মে মাসে প্রবাসী আয় ২৯৭ কোটি ডলার

Bangladesh Remittances May

কোরবানির ঈদের প্রাক্কালে দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তির হাওয়া বইছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স খাতে। সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রবৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং ডলারবাজারে চাপ কিছুটা হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ তিন দিনেই (২৯-৩১ মে) এসেছে ২৪৭০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, যা ঈদ উপলক্ষে বাড়তি অর্থ প্রেরণের ইঙ্গিত দেয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট প্রবাসী আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রমজানের সময় অর্থাৎ গত মার্চ মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার, যা এপ্রিল মাসে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ২৭৫ কোটি ডলারে। এরপর মে মাসে আবারও প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় থাকায় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার আভাস মিলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এই ধারাবাহিক উন্নতির পেছনে সরকারের বৈধ পথে অর্থ প্রেরণে উৎসাহমূলক প্রণোদনা এবং হুন্ডির মতো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ভূমিকা রয়েছে।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে মার্কিন ডলার সংকট কিছুটা লাঘব পেয়েছে। এখন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ১২৩ টাকা দরেই প্রবাসী আয় সংগ্রহ করছে, যদিও খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। এতে করে ডলারের দামে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সরকারের অর্থনৈতিক পদক্ষেপের প্রভাবে গত বছরের আগস্ট থেকে টানা ৭ মাস ধরে প্রবাসীরা প্রতি মাসে গড়ে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে আসছেন। ফেব্রুয়ারিতে পাঠান ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং জানুয়ারিতেও ছিল ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রবাসী আয় হলো দেশের একমাত্র দায়বিহীন বৈদেশিক মুদ্রার উৎস, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রাখে। ফলে ঈদুল আজহার মতো বড় উৎসবের আগে প্রবাসী আয়ের এই ধারা বজায় থাকলে তা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যাংক কর্মকর্তারাও আশা করছেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেও প্রবাসীদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের রেমিট্যান্স আসবে।