ভারতীয়দের জন্য ভিসা সার্ভিস ‘বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

bangladesh Suspended india visa

দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার মধ্যেই ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা সার্ভিস সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দূতাবাস সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ হাইকমিশন কমপ্লেক্স ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শত শত নেতা এবং কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। পাশাপাশি গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারকে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যভাবে সমর্থন দিয়ে আসছিল দেশটি। এসব কারণে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল।

এরই মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হন অন্যতম জুলাইযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক শরিফ ওসমান বিন হাদি। নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার গুলিতে আহত হয়ে তিনি এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৮ ডিসেম্বর শহীদ হন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের সামনেও প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কারণ, ধারণা করা হচ্ছে—ওসমান হাদিকে গুলি করা সন্ত্রাসী ও তার সহযোগীরা ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ উঠেছে, উগ্রবাদী হিন্দু গোষ্ঠীর সদস্যরা হাইকমিশন কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হত্যার হুমকি দেয়।

এ ঘটনার পর ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকেও তলব করে নরেন্দ্র মোদির সরকার।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা সার্ভিস সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।