পর্তুগালে বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য কাজ এবং বসবাসের সুযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটির সরকার কাজের ভিসা ছাড়া অভিবাসীদের প্রবেশ এবং নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়া কঠোর করে তুলেছে। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, হঠাৎ করেই এই কঠোর নীতি প্রয়োগ করেছে পর্তুগাল, যা দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
নতুন নীতি ও প্রভাব
পর্তুগালের নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী, কাজের ভিসা ছাড়া অভিবাসী কর্মীরা আর দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। যদি কেউ নিয়ম বহির্ভূত পথে ঢুকে পড়েন, তাদের কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার সুযোগও থাকবে না। ফলে যারা আগে অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করে বসবাসের সুযোগ পেতেন এবং কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারতেন, তাদের জন্য এ সুযোগটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সংকট
বাংলাদেশ থেকে প্রচুর অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মী প্রতি বছর পর্তুগালে যান, বিশেষ করে কাজের সুযোগের আশায়। তবে নতুন এই নীতির ফলে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য কাজ এবং বসবাসের সুযোগ প্রায় অনুপস্থিত হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশি অভিবাসীরা যারা পর্তুগালে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের এখন কঠোরভাবে কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে, যা সহজ নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন নীতিমালা বাংলাদেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য বড় একটি ধাক্কা। যারা ইতোমধ্যে পর্তুগালে বসবাস করছেন এবং কাজের ভিসার আবেদন করার অপেক্ষায় আছেন, তাদের অবস্থাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সরকারের অবস্থান
পর্তুগালের অভিবাসন বিষয়ক উপমন্ত্রী রুই আর্মিন্দো ফ্রাইটাস জানিয়েছেন, এই নতুন নীতি ইউরোপীয় বিধি-বিধান অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে এবং অনিয়মিত অভিবাসনের প্রবাহ রোধ করাই এর মূল উদ্দেশ্য। তার মতে, অনেক অভিবাসী কর্মী পর্তুগালের শ্রম বাজারে প্রবেশ করছে এবং এতে স্থানীয় শ্রমশক্তির উপর চাপ পড়ছে।
তিনি আরও জানান, প্রায় ৪০ হাজার অভিবাসী শ্রমিকের নিয়মিতকরণের আবেদন বর্তমানে যাচাই-বাছাইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে, যার মধ্যে অনেক আবেদন দুই বছর আগে জমা দেওয়া হয়েছে। সরকার এই ব্যাকলগ সমাধান করতে কাজ করছে এবং আগামী জুনের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কঠোর নীতির বিরুদ্ধে এনজিও ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করেছে। তারা মনে করছেন, পর্তুগাল সরকার ডানপন্থি রাজনৈতিক শক্তির চাপে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনজিও প্রতিনিধিরা বলছেন, “অভিবাসীদের জন্য পর্তুগালের সহানুভূতিশীল পরিবেশ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।