আবারও বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। এবার চার ধরনের পাটপণ্য স্থলপথে আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। শুধুমাত্র সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে প্রবেশের সুযোগ থাকবে। আজ সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের কার্যালয় (ডিজিএফটি) থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, যেসব পণ্যে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো—পাট ও পাটজাতীয় কাপড়, পাটের দড়ি বা রশি, পাটজাতীয় পণ্য দিয়ে তৈরি দড়ি বা রশি, এবং পাটের বস্তা বা ব্যাগ। সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া এসব পণ্যের মাত্র ১ শতাংশ সমুদ্রপথে রপ্তানি হয়, বাকি অংশ স্থলপথে যায়। ফলে এই সিদ্ধান্ত কার্যত সহজ রপ্তানি পথ বন্ধ করে দিচ্ছে, যা বাংলাদেশের পাটশিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) সভাপতি তাপস প্রামাণিক বলেন, “এ যেন একে একে নিভিছে দেউটি। বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক হয়, এমন সব পদক্ষেপই নিচ্ছে ভারত। আমরা চাই সরকার যেন অবিলম্বে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার উদ্যোগ নেয়।”
এর আগে গত ২৭ জুন ডিজিএফটি কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়সহ বেশ কিছু পণ্য স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এবার আরও চার ধরনের পণ্য যুক্ত হলো সেই তালিকায়।
গত কয়েক মাসে ভারত একাধিক দফায় বাংলাদেশি পণ্যে অশুল্ক বাধা দিয়েছে। ১৭ মে স্থলপথে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, আসবাবপত্র, সুতা, ফল ও পানীয়সহ নানা পণ্যে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি। এরও আগে ৯ এপ্রিল কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করেছে, যা মোট রপ্তানির ৩.৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ ছিল ৯০০ কোটি ডলার, যার বড় অংশই শিল্পের কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য।