এল ক্ল্যাসিকো’তে রিয়ালকে হারিয়ে শিরোপার দোরগোড়ায় বার্সেলোনা | রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনা

raphinha scoring barcelona vs real madrid

মেসি-রোনালদোর বিদায়ের পর অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন, এল ক্ল্যাসিকোর জৌলুস বুঝি হারিয়ে গেছে। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে, মাঠে নেমেছে নতুন মুখ। আর এই নতুন মুখেরাই দেখিয়ে দিল, ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই থেমে থাকে না কারো জন্য। মৌসুমের শেষ এল ক্ল্যাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনার মধ্যকার ৯০ মিনিট যেন ছিল ফুটবল রোমাঞ্চের অপূর্ব উপাখ্যান—শেষ হাসি হেসেছে বার্সেলোনাই।

ম্যাচের শুরুটা ছিল যেন রিয়ালের ঝড়। খেলার মাত্র তৃতীয় মিনিটে বার্সা গোলরক্ষক সেজনির ফাউলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করতে একটুও দেরি করেননি। স্রেফ পাঁচ মিনিটের মধ্যেই লুইস কম্পানিস স্টেডিয়ামে বার্সা সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন তিনি। ১৪ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের অসাধারণ এক পাস থেকে আবারও গোল করেন এমবাপ্পে। ২-০ গোলে পিছিয়ে গিয়ে বার্সার সামনে তখন বড় চ্যালেঞ্জ।

পিছিয়ে পড়লেও বার্সেলোনা হাল ছাড়েনি। একের পর এক আক্রমণে কোর্তোয়াকে ব্যস্ত করে তোলে। ১৮ মিনিটে এরিক গার্সিয়ার হেডে প্রথম গোল পায় বার্সা। এরপর ম্যাচের রঙ বদলাতে শুরু করে।

৩২ মিনিটে ধনুকের মতো বাঁকানো শটে গোল করেন ইয়ামাল। কিছুক্ষণ পরেই রাফিনিয়ার গোলে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সা। বিরতির ঠিক আগে আবারও গোল করেন রাফিনিয়া—প্রতিপক্ষ অধিনায়কের ভুলে বল কাড়েন, পাস দেন তোরেসকে, আর তোরেসের ফিরতি পাসে ঠাণ্ডা মাথায় শেষ করেন তিনি।

বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদ ঝাঁপিয়ে পড়ে গোল শোধে। কিন্তু বারবার তারা আটকে যায় বার্সা রক্ষণের সামনে। অবশেষে ৭০ মিনিটে পূর্ণ হয় এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক—ভিনিসিয়ুসের পাস থেকে গোল করে রিয়ালের হয়ে নতুন ইতিহাস গড়েন তিনি। অভিষেক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩৯ গোল করে ছাপিয়ে যান ইভান জামোরানোর ১৯৯২-৯৩ মৌসুমের রেকর্ড।

ম্যাচের শেষদিকে দুটি নিশ্চিত সুযোগ মিস করেন রাফিনিয়া ও এমবাপ্পে। ৯৬ মিনিটে ফেরমিন লোপেজ দুর্দান্ত শট করলেও গোল বাতিল হয় হ্যান্ডবলের কারণে। রিয়ালের ভিক্টর মুনোজ একক প্রচেষ্টায় গোল করতে ব্যর্থ হন ফাঁকা পোস্ট পেয়েও। শেষ বাঁশি বাজতেই স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-৩। বার্সা জয় নিশ্চিত করে মাঠে আর গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ে উল্লাস।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আরও মজবুত হলো বার্সেলোনা। ৩৫ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের থেকে ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল মাদ্রিদ। বাকি তিন ম্যাচে মাত্র একটি জয়ই দরকার বার্সার, লা লিগা ট্রফি নিজেদের করে নিতে।