বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দলের দুই শীর্ষ নেতা—চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নগরীর দরগা গেট এলাকায় ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সুলেমান হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এ বাগবিতণ্ডা ঘটে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক মহানগর বিএনপির প্রথম সারির নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “যে মানুষটির জন্য বিএনপির সৃষ্টি, সেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মহানগর কমিটির অধিকাংশ নেতা অনুপস্থিত। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তাঁর বক্তব্যের জবাবে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে কয়েস লোদী আরিফুল হককে উদ্দেশ্য করে বলেন, “হলভর্তি নেতাকর্মী রয়েছেন। উপচেপড়া ভিড় হয়েছে। এরপরও কেন জ্যেষ্ঠ নেতারা নেই বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে?” তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের আগের আন্দোলনে অনেক নেতা-কর্মী পঙ্গু হয়েছেন, তাদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না।”
তখনই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। চেয়ার থেকে উঠে আরিফুল হক ক্ষুব্ধভাবে বলেন, “শোনো, আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, সেই আলোকে কথা বলো।” একাধিক বিএনপি নেতা জানান, এই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা কয়েক মিনিট ধরে চলে। উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় আরিফুল হক বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্টের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত জরুরি। আমি নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং বিষয়টি সংগঠনগতভাবে দেখার আহ্বান জানিয়েছি।”
অন্যদিকে, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, “আমি তো কোনো নেতিবাচক কথা বলিনি। তিনিই কেন এমন আচরণ করলেন, তা আমার বোধগম্য নয়।”
সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে আরিফুল হক ও কয়েস লোদীর মধ্যে পুরোনো দ্বন্দ্ব নতুন করে প্রকাশ পেল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নেতৃত্বের সংকটই এই ধরনের ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
