কানাডা ভিজিটর ভিসা বাতিলের পরিকল্পনা, বাংলাদেশি ও ভারতীয় প্রবাসীদের নজরবন্দি

Canadian visa cancellation

আমেরিকার পর এবার কানাডায় ভিজিটর ভিসা সমস্যায় পড়তে চলেছেন বাংলাদেশি ও ভারতীয় প্রবাসীরা। দেশটির অভ্যন্তরীণ সরকারি নথি অনুযায়ী, অস্থায়ী বাসিন্দাদের অনেকের ভিসা বাতিল করা হতে পারে, সম্ভবত ভিসার জালিয়াতি রোধের জন্য।

কানাডার ইমিগ্রেশন, রিফিউজি ও সিটিজেনশিপ (আইআরসিসি), কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) এবং কিছু মার্কিন সংস্থা যৌথভাবে এমন ভিসা শনাক্ত ও বাতিলের পরিকল্পনা করছে, যেগুলো জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। এ জন্য একটি যৌথ কর্মদল গঠন করা হয়েছে। নথিতে ভারত ও বাংলাদেশকে বিশেষভাবে ‘দেশভিত্তিক সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী লেনা ডিয়াব প্রকাশ্যে জানাননি কোনো নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা। তবে নথি অনুযায়ী, সরকারের উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানো, ভিসার অপব্যবহার রোধ করা এবং সীমান্তের চাপ কমানো।

আইআরসিসি জানায়, কোনো ভিসা বাতিল ক্ষমতা প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত গভর্নর ইন কাউন্সিলের ওপর নির্ভর করবে এবং তা কানাডা গ্যাজেটে প্রকাশ করা হবে। সেখানে জানানো হবে কেন সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে, কে এর আওতায় পড়বে এবং ব্যতিক্রম বা ফেরত প্রক্রিয়া কী হবে।

ভিসা প্রক্রিয়ার পরিস্থিতি:

  • ২০২৩ সালের মে মাসে ভারতীয় নাগরিকদের আশ্রয় দাবির সংখ্যা ছিল মাসে ৫০০-এরও কম, যা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্রায় ২ হাজারে বেড়ে যায়।
  • অস্থায়ী বাসিন্দাদের ভিসা অনুমোদনের গড় সময় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ৩০ দিন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বেড়ে ৫৪ দিন।
  • ভিসা অনুমোদনের হার কমেছে; ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে অনুমোদিত ভিসার সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার, জুনে কমে ৪৮ হাজারে নেমেছে।
  • অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশকারীর সংখ্যা ৯৭% কমেছে।
  • আশ্রয় দাবির সংখ্যা ৭১% কমেছে এবং জালিয়াতি অভিযোগে ভিসা প্রত্যাখ্যান বেড়েছে ২৫%।

৩০০-এরও বেশি নাগরিক সংস্থা এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কসহ কয়েকটি সংগঠন সতর্ক করেছেন, আইন পাস হলে একটি গণনির্বাসন ব্যবস্থা তৈরি হতে পারে।

কানাডা কর্তৃপক্ষ জানায়, এ উদ্যোগ কোনো নির্দিষ্ট দেশকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়নি এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত ন্যায্যতা বজায় রাখা হবে।