সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার দেওয়া এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীই ছিলেন না; তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারাল। তার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। তার অবদান, দীর্ঘ সংগ্রাম এবং তার প্রতি জনগণের আবেগ বিবেচনায় নিয়ে সরকার চলতি মাসেই তাকে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার আপসহীন নেতৃত্বের ফলে গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে জাতি বারবার মুক্ত হয়েছে এবং নতুন করে অনুপ্রেরণা পেয়েছে। দেশ ও জাতির প্রতি তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও জাতির কল্যাণে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা, গণমুখী নেতৃত্ব এবং দৃঢ় মনোবল সব সময় পথ দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত রাজনীতিককে হারাল।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন, যিনি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি স্মরণ করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালে গৃহবধূ থেকে রাজনীতির মাঠে আসা বেগম খালেদা জিয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বই স্বৈরশাসক এরশাদের দীর্ঘ ৯ বছরের দুঃশাসনের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বহু কর্ম ও সিদ্ধান্ত দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করা তার একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অত্যন্ত সফল। তিনি কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পাঁচটি পৃথক সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত হন। এছাড়া ২০০৮ সালে যে তিনটি আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, সেখানেই বিজয় লাভ করেন।
