পরপর দুই দিনে ভূমিকম্প ও পরবর্তী ঝাঁকুনিতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক আঘাত এবং আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তা বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ১৫ দিন সব ধরনের শিক্ষাক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে আগামীকাল রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে সব আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের ভার্চুয়াল জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও আফটারশকে শিক্ষার্থীদের ওপর সৃষ্ট শারীরিক-মানসিক আঘাত, ভবনগুলোর সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনা করে আবাসিক হলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল, ঢাবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর এবং প্রধান প্রকৌশলীর মতামত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় ঝুঁকি মূল্যায়ন ও সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হলে রাখা নিরাপদ নয়। তাই জরুরি ভিত্তিতে সব হল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাবির সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ এ সময়ে স্বাভাবিকভাবে খোলা থাকবে। সভায় সিন্ডিকেট সদস্য ছাড়াও চিকিৎসা অনুষদের ডিন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং প্রধান প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।
হলে হলে জরুরি পরিদর্শন
পরপর দুই দিন ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাবির কয়েকটি আবাসিক হলে দেয়াল ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়া, আতঙ্কে দৌড়ে বের হওয়া ও লাফিয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ডজনখানেক শিক্ষার্থী আহত হন। এসব ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে হলে জরুরি পরিদর্শন শুরু করেছে।
প্রশাসন জানায়, পুরোনো ভবনগুলোতে কাঠামোগত দুর্বলতা থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে হল খালি রেখে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রাথমিক সংস্কার সম্পন্নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
