আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বৃহস্পতিবার (আজ) সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে একত্রে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিগণ, মুসলিম দেশের কূটনীতিক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
জাতীয় ঈদগাহে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য ৫টি গেট নির্ধারণ করা হয়েছে—যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ১টি নারীদের জন্য। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে। তল্লাশির জন্য প্রবেশপথে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়াল চেকপোস্ট থাকবে। নারী মুসল্লিদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, রাজধানীতে এবার ১১৮টি ঈদগাহ ও ১,৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও শিয়া, কাদিয়ানি এবং সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আরও ১১টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রথমটি সকাল ৭টায় শুরু হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহের জামাতটি বায়তুল মোকাররমে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা সংস্থা, সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সিটিটিসি, ডিবি, ডগ স্কোয়াড, এসবি সুইপিং টিমসহ সব ইউনিট মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক গোয়েন্দা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। নিরাপত্তা তদারকিতে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।
ডিএমপি কমিশনার নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করে বলেন, নিরাপত্তা তল্লাশিতে সহযোগিতা করুন এবং কোনো ধরনের ব্যাগ, ধারালো বা দাহ্য বস্তু সঙ্গে না আনুন। ঈদের জামাত শেষে সুশৃঙ্খলভাবে মাঠ ত্যাগ করার পরামর্শ দেন তিনি। কোনো সন্দেহজনক কিছু মনে হলে দ্রুত নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানানোর আহ্বান জানান।
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাতে ৫০০টি এবং দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম মাঠে থাকবে। এছাড়া গাড়ি পেট্রোল, ফুট পেট্রোল ও মোবাইল টিম কাজ করবে। নিরাপত্তা তদারকির জন্য অফিসারদের মাঠে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, “সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, কোনো বড় সমস্যা হবে না। পাশাপাশি কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতন থাকার এবং জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ অথবা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি।”