লা লিগা ২০২৪–২৫ মৌসুমের চূড়ান্ত পর্বে স্প্যানিশ ফুটবলের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ—এল ক্লাসিকো—আবারও মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। এই ম্যাচ শুধুমাত্র দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই নয়, বরং শিরোপা নির্ধারণের মঞ্চ। হ্যান্সি ফ্লিকের দুর্দান্ত বার্সেলোনার বিপক্ষে এবার রিয়াল মাদ্রিদের সামনে শেষ সুযোগ, যেখানে হার মানেই শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে পড়া।
এই মৌসুমে আগের তিনটি এল ক্লাসিকোতেই হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগা, স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনাল ও কোপা দেল রে ফাইনাল—সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে বার্সা। তিন ম্যাচে বার্সেলোনা করেছে ১২টি গোল, রিয়াল করতে পেরেছে মাত্র ৪টি। এবার ম্যাচটি নিছকই সম্মান রক্ষার নয়, বরং ফ্লিকের শিষ্যদের লিগ জয় রুখে দিতে রিয়ালের জন্য এটি চূড়ান্ত পরীক্ষা।
রিয়াল শিবিরে এখন বড় দুশ্চিন্তার নাম চোট। দলের মূল ডিফেন্ডারদের বেশিরভাগই মাঠের বাইরে। দানি কারবাহাল, এদের মিলিতাও, আন্তোনি রুডিগার, ফাঁরলা মেন্দি, ডেভিড আলাবা এবং মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা—সবাই চোটে আক্রান্ত। ফলে আনচেলত্তিকে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হয়তো নামাতে হবে ফ্রান গার্সিয়া, প্রকৃত মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চুয়ামেনি, ২১ বছর বয়সী রাউল আসেনসিও এবং লুকাস ভাসকেজকে নিয়ে গঠিত একটি ‘ইম্প্রোভাইজড’ রক্ষণভাগ।
এই পরিস্থিতিতে বার্সার আক্রমণভাগ—রাফিনহা, লেভানডভস্কি ও লামিন ইয়ামালের সামনে রিয়ালকে খেলতে হবে অত্যন্ত সংগঠিতভাবে। সামান্য সুযোগ পেলে ফ্লিকের দল গোল করে বসবে—এটি এখন প্রমাণিত বাস্তবতা।
চোট সমস্যা বার্সেলোনার ক্যাম্পেও আছে। এই ম্যাচে তারা পাবে না ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে, মিডফিল্ডার মার্ক কাসাদো এবং তরুণ প্রতিভা মার্ক বের্নালকে। তবে বেঞ্চের দিক থেকে বার্সা অনেকটাই এগিয়ে।
লা লিগায় এখন পর্যন্ত বেঞ্চ থেকে বার্সা গোল পেয়েছে ১৯টি, যেখানে রিয়ালের গোল সংখ্যা মাত্র ৪। ফেরান তোরেসই করেছেন বেঞ্চ থেকে নেমে লিগে ৬ গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার বেঞ্চ থেকে আসা গোল সংখ্যা ১০। অন্যদিকে রিয়ালের শেষ বেঞ্চ গোল এসেছে ৩ জানুয়ারি, লুকা মদরিচের পায়ে। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়াল বেঞ্চ থেকে পেয়েছে মাত্র ১২ গোল (মোট গোলের ৯.৩%), যেখানে বার্সা পেয়েছে ২৫টি (মোট গোলের ১৫.৩%)। এই পার্থক্যই দেখিয়ে দিচ্ছে, দুই দলের বেঞ্চ শক্তির ব্যবধান কতটা।
লা লিগার শিরোপা বাঁচাতে হলে এবার আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদকে খেলতে হবে নজিরবিহীন রক্ষণ শৃঙ্খলার সঙ্গে। বার্সেলোনাকে কম স্পেস দিতে পারলে গোলের সুযোগ তৈরি কম হবে। কোপা দেল রে ফাইনালে কিছু সময় রিয়াল সেই কাজ করতে পেরেছিল, কিন্তু পুরো ম্যাচে গঠন ধরে রাখতে না পারায় হেরে যায় ৩–২ ব্যবধানে।