প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন (ইন্টেরিম) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন কমিশনের সদস্য নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “এই প্রতিবেদনটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশ করতে হবে।” তিনি কমিশন সদস্যদের নির্দেশনা দেন, প্রতিবেদনের করণীয় বিষয়গুলো নির্দিষ্টভাবে তালিকাবদ্ধ করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে, যাতে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
কমিশনের একজন সদস্য উল্লেখ করেন, “ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা এখন অনুশোচনায় ভুগছেন। আত্মশুদ্ধির প্রয়াসে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমনকি দুজন কর্মকর্তা লিখিতভাবে মুক্তি চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন, যা গণভবনে পাওয়া গেছে এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে সে বিষয়ে স্বীকার করেছেন।”
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট ১,৮৫০টি গুম সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১,৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। সদস্যরা আশঙ্কা করছেন, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তারা আরও জানান, গুমের শিকারদের মধ্যে এখনো তিন শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত ব্যাংক হিসেব পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান কমিশন প্রধান।