ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ড্যার লায়েন দাবি করেছেন যে, আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করা জরুরি। তিনি বলেছেন, ইউরোপকে একই সঙ্গে মানবিক ও নিয়ন্ত্রিত একটি অভিবাসন ব্যবস্থার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
বার্ষিক স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন (SOTEU) ভাষণে ফন ড্যার লায়েন আশ্রয়প্রদানকে মানবিক রাখার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন যে, ব্রাসেলস আগামী বছরের বাজেটে অভিবাসন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য অর্থায়ন তিনগুণ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করেছে — যার উদ্দেশ্য সীমান্ত নিরাপত্তা শক্ত করা ও অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা।
ফন ড্যার লায়েন আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, বর্তমানে অনেকেই ইউরোপে থাকা-অধিকারের বিধি মেনে না চলায় হতাশা তৈরি হচ্ছে এবং এই বিভ্রাটের মধ্যে ‘রিটার্ন’ বা প্রত্যাবাসন ব্যবস্থা শক্ত নয়। তিনি বলেন, ‘‘এমন অবস্থা হওয়া উচিত নয় যে, যাদের ইউরোপে থাকার আইনি অধিকার নেই, তাদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশই ফেরত যাচ্ছে’’ — আর এজন্য দ্রুতভাবে ‘কমন ইউরোপিয়ান সিস্টেম ফর রিটার্নস’ মেনে নেওয়া দরকার বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি।
ভাষণে তিনি মানবপাচার ও চক্রের বিরুদ্ধে কড়া বিধান আনবার কথাও বলেন। ফন ড্যার লায়েন বলেন যে, পাচারকারীরা ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ ইউরো আয় করছে; তাদের ব্যবসায়িক মডেল ভেঙে দিতে এবং অনলাইনও সহ তাদের কার্যক্রম ঠেকাতে সামাজিক মাধ্যম ও অনুসন্ধান কেন্দ্রগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়া মানবপাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, তাদের চলাচল সীমাবদ্ধ করা ও মুনাফা আটকানোর মতো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাবও তিনি উত্থাপন করেন।
ইইউ প্রেসিডেন্ট আরও জানান যে, ইউরোপকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পালন করতে হবে — তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শেষ পর্যন্ত ইউরোপকেই বজায় রাখতে হবে, না যে অনিওর সুবিধাভোগীরা বা পাচারকারীরা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদেরকে এমন একটি সিস্টেম প্রয়োজন যা মানবিক হবে, কিন্তু একই সঙ্গে অতি সরলও হবে না।’’