দেশে ছুটি কাটাতে আসা প্রবাসীরা আগামীতে ৬০ দিন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই নিজেদের স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে দেশে অবস্থান ৬০ দিনের বেশি হলে বাধ্যতামূলকভাবে মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সভায় উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ডধারী প্রবাসীরা সর্বমোট তিনটি ফোন আনতে পারবেন—নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের পাশাপাশি আরও দুটি নতুন ফোন ট্যাক্স ছাড়াই দেশে আনা যাবে। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। আর যাদের বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত ফোন আনতে পারবেন ট্যাক্স ছাড়া।
প্রবাসীদের অনুরোধ করা হয়—মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র সাথে রাখতে। কারণ বিদেশের বিমানবন্দরে সংগঠিত কিছু চোরাচালানি চক্র সাধারণ যাত্রীদের ব্যবহার করে স্বর্ণ বা দামি ফোন ট্যাক্স ছাড়া পাচারের চেষ্টা করে থাকে। কাগজপত্র থাকার ফলে এই সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি কমবে।
সভায় বৈধভাবে আমদানি করা স্মার্টফোনের শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানিতে মোট শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। শুল্ক কমানো হলে বৈধ আমদানি বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারে ফোনের দামও কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন শিল্পকে প্রতিযোগিতামূলক রাখতে আমদানি ও স্থানীয় উৎপাদনের শুল্ক সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি, এনবিআর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একাধিক বৈঠক করেছে। মন্ত্রণালয়ের বিশ্বাস—চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ডিভাইস শিল্পের উন্নয়নকে আরও গতিশীল করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে সবাইকে সতর্ক করে বলা হয়—নিজের অজান্তে কেউ আপনার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কিনা তা নিয়মিত যাচাই করতে। অনলাইন স্ক্যামিং, সাইবার অপরাধ, জুয়া বা মোবাইল ব্যাংকিং-সংক্রান্ত অপরাধে আপনার সিম ব্যবহার হলে আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই সবসময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—বিদেশের পুরোনো মোবাইল ফোন দেশে ডাম্পিং বন্ধ করা হবে। কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে আনার প্রবণতা রোধে শিগগিরই বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ ছাড়া প্রস্তাবিত ‘টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী) ২০২৫’-এ ই-কোয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন ডেটা সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনসংক্রান্ত উপাত্ত ফাঁস হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। নাগরিকদের উদ্দেশে বলা হয়—অযথা ভয় বা গুজবে কান না দিয়ে সচেতন থাকার জন্য।
